মেদিনীপুরে কলেজ-কলেজিয়েট মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের পেছনে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। কপ্টার ওঠা-নামার সময়ে যাতে ধুলো না ওড়ে সে জন্য হেলিপ্যাডের চারপাশে গোবর লেপে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: কিংশুক আইচ ও সৌমেশ্বর মণ্ডল
মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এলেই বালি নিয়ে কড়া বার্তা দেন। এ বারও তিনি জেলায় এসে বালি বার্তা দেবেন, ধরে নিয়ে আগেভাগেই সতর্ক প্রশাসন। জেলায় বালি কারবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হল গড়বেতা। মুখ্যমন্ত্রীর জেলায় আসার খবরে সেই গড়বেতায় বালির উপর তীক্ষ্ম নজরদারি শুরু হয়েছে প্রশাসনের। বালি নিয়ে গঠিত ব্লক টাস্ক ফোর্সের (ব্লক, পুলিশ ও ভূমি দফতরকে নিয়ে গঠিত) সদস্যেরা খাদানগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শন করছেন। এমনকি বালি পরিবহণের রাস্তা গুলিতেও চলছে পুলিশের টহলদারি। এতে ধরাও পড়ছে অবৈধ বালি গাড়ি।
রাজ্য জুড়ে বালির অবৈধ কারবারে রাশ টানতে গত বছরের জুলাইয়ে রাজ্য সরকার বালি খাদান নীতি (স্যান্ড মাইনিং পলিসি) চালু করে পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয়করণ করে। তখন থেকে পুরো কারবারই চলে অনলাইনে। সে ক্ষেত্রে অবৈধ কারবারে কিছুটা রাশ টানা গেলেও, বালি চুরি আটকানো যায়নি। কয়েকদিন আগে শিলাবতীর লোখাটাপোল ঘাট থেকে বালি বোঝাই একটি ট্রাক্টরকে ধাওয়া করে ধরে পুলিশ মামলা করে। অভিযোগ ছিল, সেই ট্রাক্টরে অবৈধ উপায়ে বালি তুলে পাচার করা হচ্ছিল। কয়েকদিন আগে গড়বেতার কয়েকটি বালি খাদান পরিদর্শন করেছেন বিএলআরও কল্লোল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘বৈধ বালি খাদান গুলি পরিদর্শন করা হচ্ছে। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অবৈধ কিছু দেখলেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে গাড়িতে বালির অতিরিক্ত বহন (ওভারলোডিং) একেবারে বন্ধ করা হয়েছে।’’
বালি কারবারের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের যোগ নিয়েও জেলায় এসে সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গড়বেতা ও তার আশেপাশের এলাকায় সরাসরি না হলেও শাসকদলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বেনামে বালি যোগের অভিযোগও আছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, গড়বেতার ২-৩ জন তৃণমূল নেতা মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে মোহনপুরের কাঁসাই নদীতে একটি বালি খাদানের সঙ্গে যুক্ত। তাছাড়া অভিযোগ আছে, গড়বেতায় এখন চালু ৬ টি বালি খাদানেও (গড়বেতা ১ ব্লকে মোট বৈধ বালি খাদান ২২ টি) পরোক্ষে যুক্ত শাসকদলের কয়েকজন কর্মী। তৃণমূলের বৈঠকে মাঝেমধ্যেই এ নিয়ে সরব হন অনেকে। সবমিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে বালি নিয়ে অস্বস্তি কাটেনি তৃণমূল শিবিরে। যদিও, গড়বেতার তৃণমূল নেতারা তা মানতে চাননি। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘বালি নিয়ে প্রশাসন কড়া, দলের নেতা - কর্মীদের জড়িয়ে যাওয়ার খবর নেই।’’ ব্লকের নেতা পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অসীম সিংহরায় বলেন, ‘‘গড়বেতায় বালি কারবারে দলের কেউ যুক্ত নয়, মেদিনীপুরে গোপনে কেউ যুক্ত থাকলে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে বালি নিয়ে যাতে বিড়ম্বনায় পড়তে না হয় সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক প্রশাসন। জানা গিয়েছে, গড়বেতা সহ জেলায় বৈধ বালি খাদানের সংখ্যা, কতগুলি চালু আছে, সেখানে কারা কারা যুক্ত-এসব নিঁখুত তথ্য সংগ্রহ করে রেখেছে জেলা প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy