আদানি গোষ্ঠী কর্ণধার গৌতম আদানি। ফাইল চিত্র।
তাজপুর রাজ্যে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব বহু দিনের। এ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোরও কম হয়নি। শেষে রাজ্য জানায়, তারা একাই এই বন্দর গড়বে। এ জন্য জমিও দিয়েছে তারা।
সেই মতো বন্দর তৈরির জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে যে আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছিল তা জমার শেষ দিন ছিল গত ১৪ মার্চ। অনেক সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে বলে দাবি করেছিল রাজ্য সরকার। মাস তিনেকের মধ্যে যোগ্য সংস্থাকে বেছে কাজের বরাত দেওয়া ও তিন বছরের মধ্যে বন্দর তৈরির কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরে ছ' মাস কেটেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১ ব্লকের তাজপুরে পরিবেশবান্ধব সমুদ্র বন্দরের কাজ শুরু হয়নি এখনও।
কলকাতার বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে আগামী ১০ বছরে পশ্চিমবঙ্গে ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছিলেন আদানি গোষ্ঠী কর্ণধার গৌতম আদানি। তাঁকে তাজপুর বন্দর নিয়ে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে জানিয়েছিলেন, তাজপুরে দ্রুত বন্ধ তৈরি হবে। সব প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করেছিল জেলা প্রশাসনও। সাম্প্রতিক কালে আদানি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা একাধিকবার তাজপুরে এসে সরাসরি প্রস্তাবিত বন্দর এলাকা পরিদর্শনও করেন। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও হয় আদানির। তারপর সবই থিতিয়ে গিয়েছে।
২০১৯ সালে দিঘার শিল্প সম্মেলন থেকে তাজপুর বন্দরের প্রকল্প অফিস উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের হাতে তখন তাজপুর বন্দরের ২৬ শতাংশ শেয়ার এবং কলকাতা বন্দরের হাতে বাকি ৭৪ শতাংশ শেয়ার ছিল। পরে অবশ্য একক ভাবেই তাজপুরে বন্দর গড়ার বলে সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। পরপর দু'দফায় বন্দর গড়তে চেয়ে আগ্রহী সংস্থার কাছে দরপত্র চাওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৪ মার্চ সময়সীমার মধ্যে অনেক সংস্থাই আগ্রহপত্র জমা গেয়। আদানি এবং জিন্দলদের মধ্যে যথেষ্ট লড়াইও নাকি চলে। আদানি গোষ্ঠী সর্বনিম্ন ০.২৫ শতাংশ রাজস্ব দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি জানায়। আর জিন্দলরা ০.২৩ শতাংশ রাজস্ব দেবে বলে জানিয়েছে। শেষমেশ আদানি গোষ্ঠীকেই ৯৯ বছরের চুক্তিতে তাজপুরে সমুদ্র বন্দরের প্রাথমিক কাজের ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে বলে খবর।
তবে সব খবরই হাওয়ায় ভাসছে। তাজপুরে কোনও তোড়জোড়ই নেই। সাইট অফিসে একজনই কর্মচারী রয়েছেন। তিনি শুধু নজরদারি চালান। স্থানীয় তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ জানা বলেন, ‘‘কয়েকবার লোকজন এসে এলাকায় ঘুরে গিয়েছেন। তবে কোথায় বন্দর হবে, তার কিছুই এখনও চোখে পড়েনি।’’ স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি বলছেন, ‘‘তাজপুরের বন্দর গড়তে চেয়ে অনেক সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে বলে শুনেছি। রাজ্যের তরফে একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তারা লগ্নির কথা ঘোষণা করবে বলে আশাবাদী।’’ (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy