প্রতীকী ছবি
স্বামীর অত্যাচারে দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেছিলেন এক তরুণী। এরপর বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে । কিন্তু ওই তরুণী বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি না হওয়ায় আক্রোশের জেরে স্ত্রী এবং দুই শিশুকন্যাকে অ্যাসিড ছুঁড়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। এখনও ওই তরুণী ও তাঁর দুই মেয়ের চিকিৎসা চলছে। আক্রান্ত তরুণী সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতে ওই তরুণী ও তাঁর দুই মেয়ে ৩৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন।
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি রাতে খেজুরি থানার দক্ষিণ তল্লা গ্রামে বাপেরবাড়িতে থাকার সময় ওই অ্যাসিড হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন ওই তরুণী এবং তাঁর বছর ছয়েকের ও বছর দেড়েকের দুই মেয়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তরুণীর স্বামী দীনেশ মান্না শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। ওই সময় তরুণী তাঁর শিশুকন্যাদের নিয়ে বাড়ির দরজার কাছে আসতেই দীনেশ তাঁদের লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছোড়ে ও পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। অ্যাসিডে জখম ওই তরুণী ও দুই শিশুকন্যাকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মূল অভিযুক্ত দীনেশ মান্নার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঘটনার পরেই সে পালিয়ে গেলেও পরে দীনেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাঁথি আদালতে ওই মামলা চলছে।
প্রথমে তমলুক জেলা হাসপাতাল ও পরে কলকাতার হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলে ওই তরুণী ও তাঁর দুই মেয়ের। এখনও চিকিৎসার জন্য মাঝেমাঝে তাঁদের কলকাতায় যেতে হয়। আদালতে মামলা চলার পাশাপাশি ওই তরুণী সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। ‘ডিস্ট্রিক্ট ক্রিমিনাল ইনজুরি কমপেনসেসন বোর্ড’ ওই আবেদন বিবেচনার পর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করে। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ ওই তরুণীকে ১৫ লক্ষ টাকা ও তাঁর দুই শিশুকন্যাকে ১০ লক্ষ টাকা করে মোট ৩৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে সুমনকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘খেজুরির ওই অ্যাসিড আক্রান্তদের ভবিষ্যতের সুরক্ষায় নিয়মানুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণের আবেদন পাওয়ার পরে ‘ডিস্ট্রিক্ট ক্রিমিনাল ইনজুরিস বোর্ড’ তা বিবেচনা করে আক্রান্তদের ৩৫ লক্ষ টাকা সাহায্যের সুপারিশ করে। রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ আক্রান্তদের ওই ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।’’
এদিন তরুণী বলেন, ‘‘আমাকে ও মেয়েদের এখনও নিয়মিত চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। বড় মেয়ের ডান হাতের সমস্যা হচ্ছে। ছোট মেয়ের নাক ও মুখের অস্ত্রোপচার করাতে হবে। কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। তার জন্য অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ায় চিকিৎসার সুবিধা হয়েছে। তবে যা ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। দোষীর শাস্তি চাই আমি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy