—ফাইল চিত্র।
খেজুরি-২ ব্লকে মঙ্গলবার স্থায়ী সমিতি গঠনের সময় বোমাবাজি ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পাঁচ বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বুধবার ধৃতদের কাঁথি মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। অন্য দিকে, খেজুরির তেঁতুলতলায় সাংসদ শিশির অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে গেরুয়া শিবির। আগামী শুক্রবার সেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, খেজুরি-২ ব্লকে স্থায়ী সমিতি গঠনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় বিডিও অফিস চত্বরে। জখম হন বিডিও। তাঁর গাড়িতেও ভাঙচুর, বোমাবাজি হয়। বিডিও অফিসের ভিতরেও ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ। এর পরেই স্থায়ী সমিতি গঠন প্রক্রিয়া অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শ্যামল মিশ্রের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় বিডিও এবং তৃণমূল নেতার তরফে আলাদা করে অভিযোগ জানানো হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে পাঁচ জন বিজেপি কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতেরা হলেন সুব্রত পাত্র, মিলন মণ্ডল, পাঁচু প্রামাণিক, চঞ্চল মণ্ডল এবং শীতল মণ্ডল। প্রত্যেকের বাড়ি খেজুরি থানার ট্যাঙরামারি এলাকায়। বুধবার অভিযুক্তদের কাঁথি মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছিলেন কাঁথির সাংসদ (তৃণমূলের) শিশির অধিকারী। ভোটাভুটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর বিকেল ৪টে নাগাদ তিনি কনভয় নিয়ে কাঁথির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, খেজুরির তেঁতুলতলার কাছে তাঁর কনভয়ের উপরে পাথর ছোড়ে এক দল দুষ্কৃতী। সেই ঘটনায় খেজুরি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তবে এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কেউ গ্রেফতার হননি। কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, “বিডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েক জনের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।” তাঁর সংযোজন, ‘‘সাংসদ শিশির অধিকারীর গাড়িতে হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কে বা কারা হামলা চালিয়েছে, তার তদন্ত চলছে। দোষীদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।”
এই ঘটনায় খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন, ‘‘গতকালের হামলার ঘটনায় বিজেপির ছ’জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। স্থায়ী সমিতি গঠন বানচাল করতে যারা বোমাবাজি এবং হামলা চালাল, তাদের আড়াল করতেই নিরীহ বিজেপি কর্মীদের রাতের বেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও চূড়ান্ত নিষ্ক্রিয় থাকায় এত বড় ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্যে যারা বোমাবাজি করল, তাদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। সেই সঙ্গে শিশির অধিকারীর উপরে যারা পাথর ছুড়েছে, তাদেরও গ্রেফতার করা হয়নি। গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’’
পাল্টা খেজুরি-২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মিশ্রের দাবি, ‘‘খেজুরি-২ ব্লকে বোর্ড গঠন করেছে তৃণমূল। স্থায়ী সমিতিও আমাদের দখলেই থাকত। ভোটের অঙ্কে বিজেপির হাতে ১৩টি ভোট এবং তৃণমূলের ১১টি ভোট থাকলেও বিজেপির ১ জন আমাদের পক্ষে ভোট দিতে রাজি হয়েছিল। সেটা জানতে পেরেই ভোটাভুটি শুরু হওয়ার মুখে বিজেপির লোকেরা হামলা চালিয়েছে। সেই সঙ্গে আমার বাড়িতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে।’’ তবে তাঁর মতে, ‘‘শিশির অধিকারীর উপর রাস্তায় কারা হামলা চালিয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। উনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুরক্ষা পেয়ে থাকেন। সাংসদের সুরক্ষার দায় তাঁদের উপরেই বর্তায়। এর সঙ্গে তৃণমূলকে অযথা জড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy