Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Potato Price high

হিমঘরে পর্যাপ্ত আলুতেও দর চড়া

পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা আলুতে স্বনির্ভর। উদ্বৃত্ত আলু ভিন্ জেলায়, ভিন্ রাজ্যে যায়। তারপরেও জেলার বাজারে আলুর দাম কমছে না।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ০৯:৩৫
Share: Save:

হিমঘর থেকে বেরনোর সময়ে আলুর দর থাকছে কেজি প্রতি ২৪ টাকার কাছাকাছি। একাধিক আড়ত ঘুরে সেই আলু যখন খুচরো বাজারে বিকোচ্ছে, তখন দর উঠছে ৩২-৩৫ টাকায়। মুনাফার লোভে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী হিমঘরে আলু আটকে রাখায় দাম বাড়ছে, এ সব বরদাস্ত করা হবে না— বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজারে পরিদর্শনও হচ্ছে। তবে আলুর দাম সে ভাবে কমেনি।

আলু ব্যবসায়ী সমিতি, হিমঘর সমিতি প্রভৃতি সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ক’দিন আগে মেদিনীপুরে এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখ। বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘জেলার বাজারগুলিতে নজরদারি শুরু হয়েছে।’’ পুলিশ সুপারের সংযোজন, ‘‘অনিয়ম নজরে এলে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’

অথচ, পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা আলুতে স্বনির্ভর। উদ্বৃত্ত আলু ভিন্ জেলায়, ভিন্ রাজ্যে যায়। তারপরেও জেলার বাজারে আলুর দাম কমছে না। ক’দিন আগে মেদিনীপুরের রাজাবাজারে পরিদর্শনে গিয়ে মহকুমাশাসক (সদর) মধুমিতা মুখোপাধ্যায়ও দেখেছেন, এক দোকানে আলু ৩০-৩২ টাকা, পাশের দোকানে ৩৪-৩৫ টাকা। এক দোকানি দাবি করেন, তিনি ২৮ টাকাতেও বেচেছেন।

অথচ জেলার ৯৩টি হিমঘর মজুত রয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ মেট্রিক টন আলু যা গোটা রাজ্যের হিমঘরে মজুত আলুর চারভাগের প্রায় একভাগ। জেলায় বছরে আলুর চাহিদা থাকে কমবেশি ২ মেট্রিক টন। আলু ব্যবসায়ীদের অনেকেই মানছেন, জেলায় উৎপাদিত আলুর ১৫ শতাংশ জেলায় থাকে। বাকি ৮৫ শতাংশই বাইরে চলে যায়।

হিমঘরে মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বাঁধার পাশাপশি আলুর দাম বাড়তে থাকায় এ বার নির্ধারিত সময়ের আগেই এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে হিমঘর খোলা হয়েছে। নতুন আলু তখন থেকেই বেরোচ্ছে। তবে দাম কমেনি। আলু ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, মাঠ থেকে আলু হিমঘরে যাওয়ার সময়েই দাম ছিল কেজি প্রতি ১৬- ১৮ টাকা। এত দাম কেন? প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির নেতা বরেন মণ্ডলের দাবি, ‘‘পাইকারি বাজারে দাম ঠিকই রয়েছে। হিমঘর থেকে বেরোচ্ছে ২৪ টাকা দরে। খুচরো বাজারে দাম খানিক বেশি।’’ হিমঘর থেকে বেরোনোর পরে একাধিক আড়ত ঘুরে খুচরো বাজারে পৌঁছয় আলু। অভিযোগ, এক শ্রেণির আড়তদার অতিরিক্ত মুনাফা লুটছেন। বরেনের কথায়, ‘‘সরকার যদি কিনতে চায়, আমরা ২৪ টাকা কিলো দরে আলু বিক্রি করতে প্রস্তুত।’’

একাংশ আলু ব্যবসায়ীর মতে, খুচরো বাজারে আলুর দাম এখন কেজি প্রতি ২৮ টাকা হওয়া উচিত। একাংশের আবার দাবি, আবহাওয়ার কারণে গেল মরসুমে আলুর ফলন কিছুটা কম হয়েছে। ফলে, হিমঘরে মজুত খানিক কম হয়েছে। বাজারে দাম কমাতে হিমঘর থেকে বেশি পরিমাণে আলু বের করার দাবি উঠছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলায় দিনে হিমঘর থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন আলু বের করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। এক আলু ব্যবসায়ীর অবশ্য মত, ‘‘বাজারে আলু কম নেই। দাম কমাতে আড়তে নজরদারি প্রয়োজন।’’ আড়তেও নজরদারি শুরু হয়েছে, দাবি প্রশাসনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cold storage West Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE