—ফাইল চিত্র
আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই আবার নেতাই দিবস। লালগড়ের নেতাই গ্রামে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে তৃণমূলের তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, খোদ রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো নেতাই দিবসের অনুষ্ঠানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসার অনুরোধ করেছেন। অভিষেকের দফতর থেকে অবশ্য এ ব্যাপারে এখনও সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়নি। তবে তৃণমূলের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের তরফেও ওই দিন শাসকদলের কোনও হেভিওয়েট নেতাকে নেতাইয়ে যাওয়ার বিষয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ছত্রধর শনিবার বলেন, ‘‘নেতাই দিবসের অনুষ্ঠানে আসার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছি। তবে উনি আসবেন কি-না সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সম্মতি পাইনি। তবে আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ তৃণমূলের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতাই দিবসে কুড়মিরা ঝাড়গ্রাম-সহ জঙ্গলমহলের চার জেলায় ‘হুড়কা জামে’র ডাক দিয়েছে। ফলে, ওই দিন অভিষেকের মতো বড় নেতা নেতাইয়ে আসবেন কি-না তা এখনও স্পষ্ট নয়। দলের একাংশ চেয়েছিলেন ওই দিন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী নেতাইয়ে আসুন। তবে সুব্রত ওই দিন মমতার সঙ্গে নন্দীগ্রামে যাবেন। ফলে, নিরাপত্তার কারণে অভিষেক না এলে কে আসবেন? জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘এ বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএমের শিবির থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। মৃত্যু হয় চার মহিলা-সহ ৯ গ্রামবাসীর। জখম হন ২৯ জন। ওই বছরের বিধানসভা ভোটে রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। তৃণমূলের ব্যাখ্যা, নেতাইয়ের ঘটনাটিকে হাতিয়ার করেই জঙ্গলমহলে সিপিএমের লালমাটি ধুয়ে গিয়ে কার্যত সর্বত্র ঘাসফুল ফুটেছিল।
পরের বছর থেকে প্রতিবার নেতাই দিবসে শহিদ স্মরণে যোগ দেন শুভেন্দু। বিজেপিতে গেলেও এ বারও শুভেন্দু নেতাইয়ে যাবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর। শুভেন্দুর সঙ্গে নেতাইয়ের নিবিড় যোগাযোগ। শুভেন্দুর ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে গ্রামবাসীকে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন। এলাকায় ‘জনসেবক’ হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে নেতাই গ্রামেও মাথা তুলেছে পদ্ম-পতাকা। কয়েকদিন আগে নেতাইয়ে বড় মিছিলও করেছে বিজেপি।
এমন আবহে নেতাইয়ের রাশ নিজেদের দিকে টানতে তৎপর তৃণমূলও। কিন্তু জেলায় দলের ‘মুখ’ ছত্রধর সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের পাটাশিমূল গ্রামে বঙ্গধ্বনি যাত্রায় গিয়ে গ্রামবাসীর বাধার মুখে পড়েন। ছত্রধরের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগসাজশের অভিযোগ তুলে এগারো বছর আগে খুন-সন্ত্রাসের বিভিন্ন ঘটনায় তাঁকে দায়ী করে বিক্ষোভ দেখান পাটাশিমূলের বাসিন্দাদের একাংশ। ওই ঘটনায় ছত্রধর বাম ও বিজেপি শিবিরকে দায়ী করেন। তবে স্বস্তিতে নেই ছত্রধরও। ওই ঘটনার পরেই ছত্রধর কলকাতায় গিয়ে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করেন বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর।
নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির তরফে অবশ্য শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানটি অরাজনৈতিক বলেই দাবি করা হয়। কমিটির সভাপতি দ্বারকানাথ পন্ডা বলেন, ‘‘আমাদের কর্মসূচি অরাজনৈতিক। কমিটির উদ্যোগে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানের পরে কেউ যদি শহিদ বেদিতে মালা দিয়ে বক্তব্য রাখতে চান, সেটা তাঁদের ব্যাপার। অন্য কেউ কর্মসূচি করতে চাইলে করতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy