Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Fraudulence

সোনার দরে লোহার মূর্তি, চক্রের খোঁজ

রবিবার রাতে চন্দ্রকোনার দরবস্তিবালা গ্রামের বাসিন্দা বুদ্ধদেব চন্দ্রকোনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে মূর্তি বিক্রি চক্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

লোহা মূর্তি বিক্রি সোনার দামে।

লোহা মূর্তি বিক্রি সোনার দামে। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ০৯:২৭
Share: Save:

দু’ কিলো সোনার মূর্তি। দাম মাত্র ১০ লাখ। সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী। পরখ করে কাঠ কেনেন। সোনা কিনবেন না তা তো হয় না। তাই মূর্তির কিছুটা অংশ ভেঙে সোনার দোকানে পরীক্ষা করিয়েছিলেন চন্দ্রকোনার আসবাব ব্যবসায়ী বুদ্ধদেব দাস। সোনা খাঁটি— দোকান থেকে এই শংসাপত্র পেয়ে দিয়েছিলেন পাঁচ লাখ টাকা। বাকি টাকা দেওয়ার আগে জানতে পারেন, সোনা নয়, বাড়ি নিয়ে এসেছেন লোহার মূর্তি।

রবিবার রাতে চন্দ্রকোনার দরবস্তিবালা গ্রামের বাসিন্দা বুদ্ধদেব চন্দ্রকোনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে মূর্তি বিক্রি চক্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। তবে প্রয়োজনে বুদ্ধদেবকেও ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রকোনা শহরে বুদ্ধদেবের কাঠের আসবাবপত্র তৈরির দোকান রয়েছে। ব্যবসার সূত্রেই চন্দ্রকোনা শহরের সুরের হাটের বাসিন্দা কাঠ ব্যবসায়ী লালু মাইতির সঙ্গে আলাপ হয় বুদ্ধদেবের। লালু বুদ্ধদেবকে কাঠ সরবরাহ করেন। ইদানীং নাকি সকাল হলেই বুদ্ধদেবের দোকানে এসে আড্ডা দিতেন লালু। গল্পগুজবের পাশাপাশি ব্যবসা বাড়ানোর গল্পও নাকি হত। সেই সুযোগেই লালু জানান, গড়বেতার রসকুন্ডু গ্রামে তাঁর এক পরিচিতের কাছে দু’কিলো ওজনের একটি সোনার মূর্তি রয়েছে। জঙ্গল থেকে তিনি নাকি সেই মূর্তি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। দোকানে নিয়ে গেলে জানাজানি হওয়ার ভয়ে অল্প দামে সেটি বিক্রি করতে চান। লালু জানান, তাঁর কাছে এত টাকা নেই। তাই লালু ওই মূর্তিটি বুদ্ধদেবকে কেনার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবে বুদ্ধদেবও রাজি হয়ে যান।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, দিন চার পাঁচেক আগে রসকুন্ডু গিয়ে ওই মূর্তি দেখে আসেন দু’জনে। বুদ্ধদেব জানান, মূর্তিটি সোনার কি না,তা আগে পরীক্ষা করে নেবেন। রাজি হন বিক্রেতা। দশ লক্ষ টাকায় দাম চূড়ান্ত হয়। দরদাম হওয়ার পরই মূর্তির খানিকটা অংশ ভেঙে চন্দ্রকোনা শহরে এক টঞ্চ দোকানে গিয়ে পরীক্ষা করান বুদ্ধদেব। খাঁটি সোনার শংসাপত্রও মেলে। এরপরই পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে মূর্তিটি কিনে নেন তিনি। তারপরই নকল মূর্তির ঘটনা জানাজানি হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, অনেক আগে থেকেই ওই মূর্তি বিক্রির চক্রটি সক্রিয়। দুষ্কৃতীদের কাছে সোনার একটি মূর্তি রয়েছে। সেটি দেখিয়ে প্রতারণা করে তারা। মূর্তি হস্তান্তর করার সময় সোনার মূর্তির বদলে নকল মূর্তি দেয়। লালু মূর্তি বিক্রি চক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তাঁকে ধরতে পারলেই পুরো চক্রের হদিস মিলবে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই অবশ্য অভিযুক্ত লালু চম্পট দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Fraudulence ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy