প্রতীকী ছবি।
মাদক কারবারের প্রতিবাদ করায় ভাইয়ের হাতে খুন হতে হল দাদাকে! রবিবার রাতে খড়্গপুর শহরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লিতে এমন অভিযোগে শোরগোল পড়েছে।
বাড়ির সামনেই ভক্তি রাও (৪৫)-কে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাঁকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। মেদিনীপুরে পৌঁছেই মৃত্যু হয় ভক্তির। তাঁর ছোট ভাই বছর পঁচিশের সুমিত রাওয়ের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ উঠেছে। বাড়ির দরজার সামনে দাদাকে বাইক দিয়ে সুমিত জোরে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। রাস্তার নর্দমার ধারে ছিটকে পড়েন ভক্তি। কংক্রিটের গার্ডওয়ালে মাথা ফেটে সংজ্ঞা হারান।
পরিজনেরা জানান, রবিবার দুপুরে সুমিতের মাদকের কারবারে জড়িত থাকার প্রতিবাদ করেন বড়দা ভক্তি ও মেজদা সুমন রাও। বদলার হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সুমিত। রাতে বাড়ি সুমিত ফের অশান্তিতে জড়ায় ভক্তির সঙ্গে। তার পরেই ওই ঘটনা। বিষয়টি জানাজানি হতেই সুমিতকে ধরে স্থানীয় যুবকেরা। জানা যায়, আয়মার বাসিন্দা শেখ আনোয়ারের বাইক ব্যবহার করেছিল সুমিত। পুলিশ সুমিত রাও ও আনোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাইক খুনের অস্ত্র নয়। কিন্তু বাইকের ধাক্কায় কেউ জখম হলে মৃত্যুও হতে পারে। আমাদের ধারনা খুনের উদ্দেশ্য নিয়েই বাইকের ধাক্কা মারা হয়েছে। ভাইকে আটক হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত আরও তিনজনের নাম পেয়েছি। সকলকেই গ্রেফতার করা হবে।”
রেলশহরে বহুদিন ধরেই মাদকের নেশার রমরমা। এই কারবারে বাধা এলেই হচ্ছে প্রাণঘাতী হামলা। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক বছর ধরে আইআইটি টেকমার্কেটে ইডলি-ধোসার দোকান চালাচ্ছিলেন ভক্তি ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জু রাও। আর সুমনের মুদি দোকান রয়েছে। অষ্টম শ্রেণিতে স্কুলের পাট চোকানো সুমিত ক্রমেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছিল। কয়েক মাস আগে সুমিতকে একটি পিক-আপ ভ্যান কিস্তিতে কিনে দিয়েছিলেন দাদারা। তবে কিস্তির টাকা পরিশোধে পিক-আপ ভ্যান ভাড়াতেও দিচ্ছিল না সুমিত। উল্টে জড়িয়েছিল মাদকের কারবারে। বাড়িতে আনাগোনা বাড়ছিল বিভিন্ন এলাকার যুবকদের।
সুমন বলেন, “ভাই অনেক আগে থেকেই নেশার খপ্পরে পড়েছিল। ওর খোঁজে পুলিশও এসেছিল। বাবা-মায়ের সম্মানের কথা ভেবে চুপ ছিলাম। দাদার মেয়ে মেডিক্যাল পড়ছে। ছেলেটাও পড়াশোনা করে। ওদের কথা ভেবেও শঙ্কিত ছিলাম। কিন্তু ভাই কথা শুনছিল না। শেষমেশ দাদাকে মেরে ফেলল। ভাই ও ওর সঙ্গীদের চরম শাস্তি চাই।”
পরিজনেরা জানিয়েছেন, রবিবার দুপুরে বাড়িতেই কয়েকজন যুবকের সঙ্গে বসে মাদক সেবন করছিল সুমিত। তখনই ভক্তি ও সুমন প্রতিবাদ করেন ও অন্যদের তাড়িয়ে দেন। স্থানীয় যুবক তথা সিপিআই নেতা আয়ুব আলি বলেন, “সুমিত যার বাইক ব্যবহার করেছিল সেই শেখ আনোয়ার মাদক কারবারের পান্ডা। এ ছাড়াও এলাকায় তিনজন যুবক আছে। পুলিশ ওদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy