জয়ী তৃণমূল প্রার্থী শান্তনু পাল। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটি আসনে তিনটি আলাদা আলাদা দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন একই পরিবারের তিনজন। সিপিএমের হয়ে কাকা। আর তাঁর দুই ভাইপো লড়েছিলেন বিজেপি ও তৃণমূলের হয়ে। শেষমেশ তৃণমূল প্রার্থী ভাইপোর কাছে হারতে হয়েছে কাকাকে। বিজেপি প্রার্থী দাদা হারলেন ছোট ভাইয়ের কাছে। পঞ্চায়েত ভোটে হার-জিত নিয়ে যখন রাজ্য জুড়ে লাগামছাড়া সন্ত্রাস চলছে, তখন কোলাঘাটের পাল পরিবারের সদস্যরা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন পরিবারের সদস্যদের হার-জিতের মধুর অধ্যায়। পঞ্চায়েতের ফলের দিকে যেমন গোটা রাজ্যের মানুষের নজর ছিল। তেমনি কোলাঘাটের মানুষের বাড়তি নজর ছিল কোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আশুরালি গ্রামের ১০৪ নম্বর বুথে। কারণ এই বুথে এবার যুযুধান তিনটি দলের প্রার্থী ছিলেন একই পরিবারের তিন জন সদস্য। সম্পর্কে তাঁরা কাকা ও দুই ভাইপো। কাকা সন্ন্যাসী পাল দাঁড়িয়েছিলেন সিপিএমের হয়ে।সন্ন্যাসীর এক ভাইপো শান্তনু দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূলের হয়ে। আরেক ভাইপো উত্তম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বিজেপির হয়ে। তিনজনই আলাদা আলাদা ভাবে জন সংযোগ ও ভোট প্রচার করেছিলেন। ভোটের ময়দানে রাজনৈতিক লড়াই একে অপরের বিরুদ্ধে থাকলেও পারিবারিক সম্পর্কে তার আঁচ পড়েনি।
ভোটের আগে তিন প্রার্থীই বার্তা দিয়েছিলেন ভোটকে কেন্দ্র করে এলাকায় যাতে কোনও গোলমাল না হয়। জেলার বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে একাধিক অশান্তির ঘটনা ঘটলেও ভোটের দিন আশুরালি ছিল শান্ত। ৯০০ জন ভোটারের মধ্যে ৭৭৬ জন ভোটার এখানে ভোট দিয়েছেন। ভোটের ফল নিয়ে আগ্রহ ছিল পাল পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও। ভোট গণনা শেষে দেখা যায় সিপিএম প্রার্থী সন্ন্যাসী পাল পেয়েছেন ২৪৯ টি ভোট। তৃণমূল প্রার্থী শান্তনু পেয়েছেন ৩৮১ টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী উত্তম পেয়েছেন ১৩০টি ভোট। নির্দল পায় ৪ টি ভোট।১২টি ব্যালট বাতিল হয়।
শান্তনুর জয়ে খুশি এলাকার তৃণমূল নেতা কর্মীরা। পরিবারের দুই সদস্যর পরাজয়ে কিন্তু মন খারাপ হয়নি পরিবারের অন্য সদস্যদের। কাকা সন্ন্যাসী পাল বলেন,"আমাদের বুথে ৫০ শতাংশ ভোটার মহিলা। গতবার এই বুথে সিপিএম জিতেছিল। কিন্তু এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারই ভোটে তফাৎ গড়ে দিল। জয় পরাজয় আমাদের পারিবারিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব ফেলেনি।"
বিজেপি প্রার্থী উত্তম বলছেন,"এই বুথে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে। মানুষ তৃণমূলকে বেছে নিয়েছে। আমার ভাই জয় পেয়েছে। আমরা খুশি। যেই জিতুক এলাকার উন্নয়ন হলেই হল।" আর শান্তনুর কথায়, "বর্তমান রাজ্য সরকার আমাদের এলাকায় প্রচুর উন্নয়ন করেছে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে রায় দিয়েছে। ভোটের ফল যাই হোক না কেন, কাকা ও দাদার সাথে পারিবারিক সম্পর্ক আগের মতোই মধুর রয়েছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy