Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Heatstroke

পুড়ছে মেদিনীপুর, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত সাত

গরমে কার্যত পুড়ছে মেদিনীপুর। তীব্র তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও গত কয়েক দিনে সাতজন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ০৮:৪৭
Share: Save:

দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রির উপরে। দিন কয়েক ধরেই। গরমে কার্যত পুড়ছে মেদিনীপুর। তীব্র তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও গত কয়েক দিনে সাতজন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। আক্রান্তরা জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দফতর সূত্রের দাবি, এঁদের প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। আক্রান্ত হলেও হিটস্ট্রোকে কারও মৃত্যু হয়নি। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, তবে সময় মতো চিকিৎসা না পেলে হিটস্ট্রোকে মারা যেতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি। তাঁর পরামর্শ, এই সময়ে ভয় না পেয়ে সচেতন থাকতে হবে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘গত কয়েক দিনে কয়েকজন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের সকলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। উদ্বেগের কিছু নেই।’’ মেদিনীপুরে তাপপ্রবাহ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথমত এবং প্রধানত, শরীরকে আর্দ্র রাখতে হবে যে করেই হোক। বারবার জল খেতে হবে। রোদে বেরোলে ছাতা, সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। সুতির হালকা জামাকাপড় পরাই বাঞ্চনীয়। ঘাম হলেও যাতে তা বাষ্পীভূত হতে পারে সহজে।’’

২৭ এপ্রিল মেদিনীপুরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৫.৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, ৪৬ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই! ২৮ এপ্রিল ছিল ৪৫.০৫ ডিগ্রি। ২৯ এপ্রিল ছিল ৪৫.১৭ ডিগ্রি। ৩০ এপ্রিল, মঙ্গলবার মেদিনীপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য লাল সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে। ‘হিট রিলেটেড ইলনেস’ (এইচআরআই) নিয়ে কেউ ভর্তি হলে হাসপাতালগুলিকে জেলায় রিপোর্ট করা ও তাঁদের চিকিৎসার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ১৫ এপ্রিলে একজন, ১৮ এপ্রিলে একজন, ২০ এপ্রিলে একজন, ২১ এপ্রিলে একজন, ২২ এপ্রিলে একজন, ২৩ এপ্রিলে দু’জন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সূত্রে খবর, আক্রান্তদের বেশিরভাগই বয়স্ক। বয়স ৬৫- র আশেপাশে।

ক’দিন আগে শালবনির একজন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরিজনেরা তাঁকে শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। ওই বৃদ্ধ দুপুরে মাঠে গিয়েছিলেন চাষের কাজে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘নানা কাজে নিয়মিত বাইরে বেরোতেই হয় যাঁদের, তাঁদের হিটস্ট্রোক সম্পর্কে সতর্ক থাকা দরকার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যে পরিমাণ গরম পড়েছে মেদিনীপুরে, তাতে যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকারই চেষ্টা করতে হবে, বিশেষ করে দুপুরবেলার দিকে। রোদের মধ্যে বেশি হাঁটাহাঁটি করলে শরীর খারাপ লাগতেই পারে। মাথা ঘুরতে পারে, প্রচণ্ড ঘাম দিতে পারে, অস্বস্তি বোধ হতে পারে।’’

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাধারণত, ড্রাই হিট অর্থাৎ শুকনো গরমই হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোকের মূল কারণ। তাঁরা জানান, বড়দের ক্ষেত্রে ঝিমুনি ভাব, অসংলগ্ন কথা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, পেশিতে টান ধরা (মাসল ক্র্যাম্প), মাথা ধরা, শরীর অত্যধিক গরম হওয়া, বমি, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া- এ সবই হিটস্ট্রোকের লক্ষণ। শিশুদের ক্ষেত্রে খাবারে অনীহা, মেজাজ বিগড়ে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, মুখের তালু, জিভ শুকিয়ে যাওয়া, অবসন্নতা হল হিটস্ট্রোকের লক্ষণ। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তাও বলেন, ‘‘এই ধরনের উপসর্গ দেখা গেলেই ধরে নিতে হবে হিটস্ট্রোক হয়েছে।’’

মেদিনীপুর মেডিক্যালের পাশাপাশি জেলার মহকুমা হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলিতে হিটস্ট্রোকের রোগীর জন্য দু’টি করে শয্যা সংরক্ষিত হয়েছে। আগামী ক’দিনও গরম থাকবে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার পরামর্শ, সকাল দশটার পরে এবং বিকেল পাঁচটার আগে রাস্তায় না বেরোনোই ভাল। বেরোতেই হলে ছাতা, টুপি নিতে হবে। বেশি করে জল খেতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Heatstroke Heat Wave midnapore Summer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy