থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতদের। নিজস্ব চিত্র
ব্যাটারি কারখানার উৎপাদন বন্ধ রেখে দাবি আদায়ের নামে জঙ্গি আন্দোলনের অভিযোগে চার শ্রমিক নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এমনই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী হল পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া।
মঙ্গলবার কারখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শ্রমিক নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মাইতি, ওই শ্রমিক সংগঠনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, কারখানাটির তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের প্রাক্তন সম্পাদক সৌমেন বাগ এবং শ্রমিক নেতা শেখ মইনুদ্দিন। বুধবার ধৃতদের হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে। এই ঘটনার পর সঞ্জয় এবং তাপসকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে হলদিয়া তৃণমূল সূত্রে খবর। পাশাপাশি এ-ও জানানো হয়েছে, বিধানসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন সৌমেন। ধৃত চার জনের মধ্যে মইনুদ্দিন অবশ্য দলীয় কোনও পদে নেই বলে তৃণমূলের দাবি।
অভিযোগ, হলদিয়ার ওই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটারি কারখানায় বেতন কাঠামো সংস্কারের দাবি তুলে সৌমেন এবং মইনুদ্দিন গেট আটকে আন্দোলন শুরু করেন সোমবার সকাল থেকে। আরও অভিযোগ, তাঁরা কোনও শ্রমিককেই কারখানার গেটে ঘেঁষতে দেয়নি। এর জেরে কারখানার উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এই আন্দোলনে পিছন থেকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাপস এবং সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে।
কারখানার অন্য একটি সূত্রে খবর, সংস্থাটি নতুন বেতন কাঠামো চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া অতিরিক্ত টাকা ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেই বেতন কাঠামো নিয়ে তাপস এবং সঞ্জয়, দুই শ্রমিক নেতার কোন্দলের জেরেই এই আন্দোলনের মূল কারণ বলে কারখানা সূত্রে দাবি। এর পর মঙ্গলবার হলদিয়ার দুর্গাচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। শুরু হয় পুলিশি তৎপরতা। মঙ্গলবার রাতে হলদিয়ায় হাজির হন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার হলদিয়ার শিল্পসংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে কারখানার শ্রমিক সমস্যা সংক্রান্ত যে কোনও বিষয় সরাসরি শ্রমমন্ত্রী এবং আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি দেখভাল করবেন।
ব্যাটারি কারখানার চিফ অপারেশান ম্যানেজার তরুণ কুমার পান বলেন, ‘‘সোমবার সকাল থেকে কারখানার গেট আটকে জঙ্গি আন্দোলন চলছিল। এর জেরে দু’দিনেই প্রায় ৩০ কোটি টাকার মতো উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’ সমস্যার কথা শুনে রাজ্য সরকার যে ভাবে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তা শিল্প সংস্থাগুলির জন্য ‘খুশির বার্তা’ নিয়ে এসেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ধৃতদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, স্বেচ্ছায় ক্ষতিসাধন, বিশ্বাসভঙ্গ-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। তাঁদের তোলা হয়েছে হলদিয়া আদালতে। ইমরান খান নামে কারখানার এক শ্রমিক বলেন, ‘‘টাকা পেয়ে যাওয়ার পর আমরা জানি না কী উদ্দেশে আন্দোলন শুরু হয়েছে। লাঠিসোটা নিয়ে কাজে ঢুকতে হুমকি দিচ্ছিল ওরা। সৌমেন বাগ স্বেচ্ছায় বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিল বিধানসভার ভোটের আগে। ও পরে এসে আন্দোলন শুরু করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy