Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মৎস্যবন্দরে অচলাবস্থা, ১৪৪ ধারা

রবিবার বন্দরে ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন লঞ্চ ও ট্রলারমালিক সহ কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। এর প্রভাব পড়েছে শঙ্করপুরের পর্যটন শিল্পেও।  সব মিলিয়ে কার্যত অশান্ত শঙ্করপুর।

প্রবেশ নিষেধ। মৎস্যবন্দরে ঢোকার দরজায় নোটিস। —নিজস্ব চিত্র।

প্রবেশ নিষেধ। মৎস্যবন্দরে ঢোকার দরজায় নোটিস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শঙ্করপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০০:৩৮
Share: Save:

মৎস্য বন্দরের জেটি দখল নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি শ্রমিক সংগঠনের কাজিয়ায় বন্দরে কার্যত অচলাবস্থা দেখা দিল।

রবিবার বন্দরে ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন লঞ্চ ও ট্রলারমালিক সহ কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। এর প্রভাব পড়েছে শঙ্করপুরের পর্যটন শিল্পেও। সব মিলিয়ে কার্যত অশান্ত শঙ্করপুর।

শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরে তিনটি জেটি রয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় নতুন জেটি এবং একটি কাঠের। এই দুই জেটিতে ট্রলারে বরফ ওঠানো- নামানোর কাজ করতেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা। তৃতীয় ও পুরনো জেটিতে কাজ করত তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন। গত ২০ জুন বিজেপি প্রভাবিত সংগঠন তৃণমূলের সেই জেটির দখল নেয় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’পক্ষের হাতাহাতি বাধে। মন্দারমণি উপকূল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তারপর শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের স্পেশ্যাল অফিসার বিশ্বজিৎ বসু এবং মন্দারমণি উপকূল থানার ওসি শুভজিৎ সরকার বৈঠকে বসে বিবদমান দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন।

কিন্তু বিজেপি তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায়, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এর পর রামনগর-১ এর বিডিও আশিস কুমার রায় দু’পক্ষকে নিয়ে শনিবার ফের বৈঠক করেন। কিন্তু সেখানেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। বিডিও বলেন, ‘‘আমরা সাত দিন সময় চেয়েছিলাম। দু’পক্ষকে বলা হয়েছিল, এই সাত দিন যে যেমন কাজ করছিল, তারা তেমন কাজ করবে। কিন্তু এই আবেদনে বিজেপি শ্রমিকরা সাড়া দেননি।’’ এর পর গোলমাল এড়াতে কাঁথির এসডিও মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্যর নির্দেশে রবিবার শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের গেটে ১৪৪ ধারার নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বন্দরের প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এর ফলে অচল হয়ে পড়েছে শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর। ট্রলারগুলি এখান থেকে বরফ ওঠানো-নামানো করতে পারছে না। ফলে ট্রলার মালিকরা অনেকেই শঙ্করপুর ছেড়ে পেটুয়াঘাট মৎস বন্দরের দিকে রওনা দিচ্ছেন।

বন্দরে অচলাবস্থার প্রভাব পড়েছে শঙ্করপুরের পর্যটন শিল্পেও। এখানে বহু হোটেল রয়েছে। সেই সব হোটেলের পর্যটকরা সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন। কারণ শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের উপর দিয়েই তাঁরা গাড়িতে সমুদ্রে যেতে পারতেন। কিন্তু বন্দরের প্রধান প্রবেশ দ্বার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের কার্যত অনেকটা রাস্তা হেঁটে সমুদ্রের দিকে যেতে হচ্ছে। তা ছাড়া বন্দর এলাকায় গোলমালের জেরে অনেকে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।

নিউটাউন থেকে সপরিবার শঙ্করপুরে বেড়াতে এসেছেন তমাল কান্তি বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এসেই শুনছি এখানে গোলমাল হচ্ছে। তাই স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে সমুদ্রের দিকে যেতে ভয় করছে। ঝামেলা হচ্ছে জানলে আসতাম না।’’

তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা মণিশঙ্কর প্রধান বলেন, “বিজেপি শ্রমিকরা তৃণমূলের শ্রমিকদের জেটি দখল করায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বিজেপি মানতে চাইছে না। আমরা এখানে কাজ করতে চাই । কিন্তু আমাদের কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।’’

বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক চন্দন দাস বলেন, “এই সমস্যার জন্য সোমবার মহকুমা শাসকের কাছে আমরা স্মারকলিপি দেব। আমাদের শ্রমিক সংখ্যা বেশি । কিন্তু তৃণমূলের কম। তাই বিজেপি শ্রমিকদের মাথাপিছু আয় কম হচ্ছে। তৃণমূল শ্রমিকদের মাথাপিছু আয় বেশি হচ্ছে। আমরা চাই একই কাজের জন্য সমস্ত শ্রমিকের আয় যেন সমান হয়।’’

বিশ্বরূপ বসু বলেন, “বন্দরের সমস্যা নিয়ে কাঁথির মহকুমা শাসক আগামী ২৫ জুন বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে দুই শ্রমিক সংগঠন থাকবে। আশা করছি সমাধান সূত্র মিলবে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Shankarpur Fisheries port শঙ্করপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy