প্রতীকী ছবি
যেখানে সাধারণত সারা বছরে খরচ হয় পাঁচশো-সাড়ে পাঁচশো কোটি, এ বার সেখানে গত এক মাসেই একশো দিনের প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় একশো কোটি টাকা!
ছবিটা পশ্চিম মেদিনীপুরের। বেশিরভাগ খরচই হয়েছে মজুরি খাতে। এর ফলে বহু দরিদ্র মানুষের হাতে নগদ অর্থ পৌঁছেছে বলেই দাবি জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের। ওই সূত্রের মতে, আগামী কয়েক মাস এ ভাবে অতিরিক্ত কাজের সুযোগ মিললে দরিদ্রদের বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। অভাবী পরিবারগুলি আর্থিক দিক থেকে কিছুটা হলেও উপকৃত হবে, বিশেষ করে লকডাউন আবহে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের কাজ প্রয়োজন, তাঁদের কাজ দেওয়ার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’ একশো দিনের প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদেরও রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, বেশি করে কাজ দেওয়ায় তিনটি উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে। ১) মজুরির মাধ্যমে স্থানীয় গরিব মানুষের হাতে টাকা যাচ্ছে। ২) এলাকার পুনর্গঠন হচ্ছে। ৩) একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গতিও আসছে।
লকডাউন খানিক শিথিল হওয়ায় গত ২০ এপ্রিল থেকে একশো দিনের কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ওই দিন থেকে ২৬ মে পর্যন্ত একশো দিনের প্রকল্পে জেলায় খরচ হয়েছে ১০২ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বাবদ ৬৮ কোটি ২১ লক্ষ টাকা, অর্ধদক্ষ এবং দক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বাবদ খরচ হয়েছে ৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। অন্য দিকে, প্রকল্পের বিভিন্ন সামগ্রী কেনা বাবদ খরচ হয়েছে ২৭ কোটি ৪ লক্ষ টাকা। বেশিরভাগ শ্রমিকই মজুরি পেয়ে গিয়েছেন। অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বাবদ বকেয়া রয়েছে ৬ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা। অর্ধদক্ষ এবং দক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বাবদ বকেয়া রয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ১,৫০,৭৬৪ পরিবারকে কাজ দেওয়া হয়েছে। ৩২,১৬,০০৭ শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। ২,৬৭,০১০ পরিবার কাজ চেয়েছে। এরমধ্যে ৪,৯৭৭ পরিবারকে নতুন করে জবকার্ড দেওয়া হয়েছে। ওই সূত্রে খবর, ওই দিন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২,১৯,৯৮৫ জনকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এর একটা অংশ পরিযায়ী শ্রমিক। যাঁরা ভিন্ রাজ্য থেকে সম্প্রতি ফিরেছেন। একশো দিনের কাজে এখন রাজ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। দ্বিতীয় বাঁকুড়া, তৃতীয় বীরভূম।
আমপান পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি মেদিনীপুরে সে একশো দিনের প্রকল্পের পর্যালোচনাও করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মন্ত্রীর নির্দেশ, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের একশো দিনের কাজ দিতে হবে। এক সূত্র মনে করছে, চলতি আর্থিক বছরে একশো দিনের প্রকল্পে খরচ হতে পারে আটশো-ন’শো কোটি টাকা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সব রকম চেষ্টা হবে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার ১ কোটি ৬০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই লক্ষ্যমাত্রা অনেকটা বাড়তে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy