ন্যূনতম মজুরি বকেয়া থাকায় শ্রম আদালতে মামলা চলছে। এর মধ্যেই ২১জন ঠিকা নিরাপত্তাকর্মীকে ছাঁটাই করায় তাঁদের পুনর্বহালের জন্য সময়সীমা বেঁধে একটি পশুখাদ্য উৎপাদনকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিল শ্রম দফতর। সোমবার খড়্গপুরের ইন্দায় উপ-শ্রম আধিকারিকের দফতরে বৈঠক ডেকে সংস্থাকে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে ওই সংস্থার দাবি, নিরাপত্তাকর্মীরা সংস্থার বিপক্ষে গিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় আর পুনর্বহাল সম্ভব নয়। পুনর্বহাল না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে পাল্টা চাপ দিয়েছেন শ্রমিকরাও।
খড়্গপুরের নিমপুরা শিল্পতালুকে মহারাষ্ট্রের ওই পশুখাদ্য উৎপাদনকারী সংস্থাটিতে একটি নিরাপত্তা এজেন্সির ২১জন ঠিকা নিরাপত্তাকর্মী কাজ করছেন বহু বছর ধরে। নিরাপত্তাকর্মীরা ঠিকা সংস্থা মারফত মজুরি পেলেও এই পশুখাদ্য উৎপাদনকারী সংস্থাই তাঁদের প্রধান নিয়োগকর্তা। নিরাপত্তাকর্মীদের দাবি, ২০০৬ সাল থেকে ১১০ টাকা ন্যূনতম মজুরি হলেও তাঁদের ৭০ টাকা দেওয়া হত। আবার ২০১৩ সালে ন্যূনতম মজুরি বেড়ে ২৩১ টাকা হলেও ১৬৪ টাকা দেওয়া হত। তাই নায্য মজুরির দাবিতে সংস্থাকে বহুবার বলেও ফল না মেলায় তাঁরা শ্রম দফতরের দ্বারস্থ হন। এরপর ন্যায্য মজুরি পেলেও আগের বকেয়া থাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে গত বছরের শেষের দিকে নিরাপত্তাকর্মীরা কলকাতা হাইকোর্টে শ্রম আদালতের দ্বারস্থ হন। এর পর থেকে মামলা চলছিলই।
এ দিকে ঠিকাদার সংস্থার সার্ভিস চার্জ না বাড়ায় ওই ঠিকাদার সংস্থা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তবে শ্রম আইন অনুযায়ী, ঠিকাদার বদলালেও শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারে না প্রধান নিয়োগকারী সংস্থা। কিন্তু বিধি না মেনে চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল ২১জন নিরাপত্তাকর্মীকে ছাঁটাই করে দেয় ওই উৎপাদনকারী সংস্থা। ছাঁটাই হওয়া নিরাপত্তাকর্মী তুষারকান্তি দে, বুদ্ধদেব মান্নারা বলেন, “আগেই ন্যূনতম মজুরির বকেয়া আদায়ের দাবিতে আমরা আদালতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এজেন্সি কাজ করবে না বলার পরই গত ১৬ এপ্রিল থেকে অন্য নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে আমাদের ছাঁটাই করে দেয় ওই সংস্থা।”
ওই ছাঁটাইয়ের পরেই শ্রম দফতরের দ্বারস্থ হয় নিরাপত্তাকর্মীরা। তবে শ্রম দফতর সব পক্ষকে বৈঠকে ডাকলেও ৫ মে-র বৈঠকে উপস্থিত ছিল না কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে সিটু নিয়ন্ত্রিত জেলা নিরাপত্তাকর্মী সংগঠন ছাঁটাই হওয়া নিরাপত্তাকর্মীদের সমর্থনে এগিয়ে আসে। সোমবার ফের বৈঠক ডাকে শ্রম দফতর। এ দিন অবশ্য ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ, ঠিকাদার সংস্থা ও শ্রমিকদের তরফে সিটুর নিরাপত্তাকর্মী সংগঠনের সম্পাদক হাজির ছিলেন উপ-শ্রম আধিকারিকের ডাকা বৈঠকে। তবে ছাঁটাই নিরাপত্তাকর্মী পুনর্বহালের সিদ্ধান্তে কারখানা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সাড়া না মেলায় বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। উপ-শ্রম আধিকারিক শ্যামল দত্ত বলেন, “বকেয়া বেতনের বিষয়টি নিয়ে শ্রম আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু এখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ যখন প্রধান নিয়োগকর্তা তখন ঠিকাদার সংস্থা বদলালেও নিরাপত্তাকর্মীদের ছাঁটাই ঠিক নয়। ওই কর্মীদের পুনর্বহালের জন্য আমরা সাতদিন সময় দিয়েছি।” যদিও কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে এইচআর রাজীব রায় বলেন, “ঠিকাদার সংস্থা আমাদের সঙ্গে কাজ করবে না বলেছে। এছাড়া ওই নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই কারখানার বিরুদ্ধে আদালতে গিয়ে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে। তাই ওঁদের ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।” আর নিরাপত্তাকর্মী সংগঠনের সম্পাদক মনোজ ধর বলেন, “নিরাপত্তাকর্মীদের কাজে পুনর্বহাল না করলে আমরা আদালতে জানানোর পাশাপাশি লাগাতার আন্দোলনে যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy