Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Metro Rakes

মেট্রোর চিনা রেক যেন দ্বাদশ ব্যক্তি, কাজে থেকেও নেই

উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর বর্তমান রেকগুলির তুলনায় স্বাচ্ছন্দ্য এবং যাত্রী-ধারণ ক্ষমতায় এগিয়ে থাকলেও নিয়মিত পরিষেবা দেওয়ার দৌড়ে টিকে থাকার ভরসা আদায় করতে পারছে না ওই রেক।

An image of Kolkata Metro

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:১৬
Share: Save:

এক দিকে প্রায় রোজই কোনও না কোনও সমস্যা লেগে রয়েছে মেট্রোয়। যার জেরে যাত্রীদের ভোগান্তি হয়ে গিয়েছে নিত্যদিনের ঘটনা। অন্য দিকে আবার বছর চারেক আগে চিন থেকে আনা উন্নত প্রযুক্তির ডালিয়ান রেক স্রেফ বসিয়ে রাখা হয়েছে বেশি
ব্যবহার না করে। ওই রেক যেন ক্রিকেট দলের দ্বাদশ ব্যক্তি! প্রশ্ন উঠেছে, রেকটিকে কি সাজিয়ে রাখতেই নিয়ে এসেছে মেট্রো? সাড়ে তিন বছর ধরে নেট প্র্যাক্টিস
(মহড়া দৌড়) করিয়ে, প্রায় ৩২ রকম পরীক্ষার পরে গত মার্চে ওই রেকটি ঘটা করে পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরে বছর ঘুরতে চললেও নিয়মিত ভাবে চলার যোগ্যতামান পেরোতে পারছে না নতুন রেক।

উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর বর্তমান রেকগুলির তুলনায় স্বাচ্ছন্দ্য এবং যাত্রী-ধারণ ক্ষমতায় এগিয়ে থাকলেও নিয়মিত পরিষেবা দেওয়ার দৌড়ে টিকে থাকার ভরসা আদায় করতে পারছে না ওই রেক। ফলে, কলকাতা মেট্রোর একমাত্র ‘পেন্ট-ফ্রি’ স্টেনলেস স্টিলের রেক দেখতে মনোহর হলেও সেটি চলতে দেখা যায় একমাত্র দুপুরের ফাঁকা সময়ে। একটি বা দু’টি ট্রিপের পরে বিকেল গড়ালেই পরিষেবা থেকে তুলে নেওয়া হয় ওই রেকটিকে। কারশেডে আবার পরের দিন ব্যবহারের জন্য ফেলে রাখা হয়। ওই রেকের কিছু সমস্যা না মেটায় চিন থেকে পরের রেকগুলি আনার বিষয়ে তৎপর হতে পারছেন না মেট্রোকর্তারা। ফলে, প্রায় ছুঁচো গেলার অস্বস্তি নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে পরিষেবা চলছে মেট্রোর। পুরনো এসি রেকগুলির বয়স হয়ে এলেও সেগুলিকেই ধুঁকতে ধুঁকতে ছুটতে হচ্ছে।

মেট্রো সূত্রের খবর, দরজা বন্ধ হওয়া সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই নাকি ব্যস্ত সময়ে ওই রেক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কখনও দরজা বন্ধ হয় দেরিতে, কখনও আবার বন্ধই হতে চায় না। অথচ, বিশেষ ভাবে কলকাতার ভিড় সামলানোর উপযোগী করেই এখনকার রেকের তুলনায় বেশি চওড়া দরজা ও একাধিক আধুনিক বৈশিষ্ট্য ওই রেকে যোগ করা হয়েছিল। এখনকার নতুন এসি রেকের তুলনায় ৪০৮ জন বেশি যাত্রী বহন করতে পারে ডালিয়ান। এ ছাড়াও, বাড়তি গতি, ঝাঁকুনিবিহীন সফরের জন্য বিশেষ স্প্রিং এবং চাকায় ডিস্ক ব্রেক-সহ আরও অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে ডালিয়ানের। মেট্রো সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ওই রেক আসার পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়। অতিমারি-পর্বে বছর দুয়েক তা বন্ধ থাকার পরে ২০২২ সালে ফের পরীক্ষা চালু হয়। গত মার্চে ওই রেক পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত হয়। মাস দেড়েক ছোটার পরে ব্যাটারি বিকল হয়ে যাওয়ায় ফের আট মাসের জন্য বসে যায় ওই রেক। চিন থেকে ব্যাটারি এনে মেরামতির পরে মাসখানেক আগে ছোটা শুরু করলেও সারা দিনে একটি বা দু’টি ট্রিপ করছে ওই রেক।

অভিযোগ, ওই রেকের দরজা বন্ধ হওয়ার সেন্সর দেরিতে সঙ্কেত দেওয়ায় চালকদের অসুবিধা হচ্ছে। দরজা বন্ধ হল কি না, বুঝতে চালকদের বাড়তি সময় স্টেশনে থমকে থাকতে হচ্ছে। তাই একটি ট্রিপ সম্পূর্ণ করতে সময়ও বেশি লাগছে। চালকের অভাবের কারণেই অনেকে ওই রেক চালানোয় অভ্যস্ত হতে পারেননি। ফলে, সমস্যা নিয়েই ঘর করছে মেট্রো। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে খবর। তবে, সমস্যা থেকে কবে নিস্তার মিলবে, তার সদুত্তর মেট্রোকর্তারা দিতে পারেননি। নোয়াপাড়া কারশেডে একটি রেক কোনও মতে রাখার ব্যবস্থা হলেও নতুন রেক রাখার জায়গা নেই। ফলে, রেক আনার কাজেও এগোতে পারছে না মেট্রো। ওই রেকে আংশিক পরিষেবা দিয়েই ক্ষান্ত থাকতে হচ্ছে তাদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy