প্রতীকী ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিকে চতুর্থ হয়েছেন তিনি। ফল প্রকাশের দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেছিলেন, ‘‘দুর্নীতিতে ভরা এ রাজ্য আমার বাংলা নয়।’’ অভিযোগ, তার জেরে এখন সমাজমাধ্যমে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে সেই ছাত্রী প্রেরণা পাল এবং তাঁর বাবা অশোককে।
অভিযোগ: কেউ লিখেছেন, ‘সরকারি স্কুলে পড়ে, সরকারের দেওয়া দশ হাজার টাকার ট্যাব পেয়ে, মাসে মাসে কন্যাশ্রীর টাকা পেয়ে, সরকারি প্রকল্পের সবুজ সাথীর সাইকেল নিয়ে স্কুলে গিয়ে এত ভাল রেজাল্ট করে আজ বোন বলছে এ সব কথা!’’ কেউ দিচ্ছেন ‘পরামর্শ’: ‘শুধু পড়াশোনায় ভাল হয়ে এ রকম কথা বলার থেকে এক জন ভাল মানুষ হয়ে ওঠা অনেক বেশি দরকার।’ অভিযোগ, রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ। ব্যক্তিগত আক্রমণও শানানো হয়েছে।
প্রেরণা অবশ্য দমে যাননি। তাঁর কথায়, ‘‘যে কদর্য ভাষায় ওঁরা আক্রমণ করছেন, সেটা তাঁদের নিম্নরুচির পরিচয়। এক জন স্বাধীন শিক্ষার্থী হিসাবে আমি নিজের মত ব্যক্ত করেছিলাম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা আমার মা। সুন্দর, আদর্শ বাংলা দেখতে চাই। দুর্নীতির এই বাংলা দেখতে চাই না।’’
প্রেরণা গাইঘাটার যে ইছাপুর হাই স্কুলের ছাত্রী ছিলেন, তার প্রধান শিক্ষক তাঁর বাবা অশোক পাল। তিনি এবিটিএ-এর রাজ্য কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় সিপিএম নেতা। অভিযোগ, সমাজমাধ্যমে তাঁর ছবি পোস্ট করে, মেয়ের নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, ‘আমি মেয়ের বাপ। আমি জাত হার্মাদ। চুরি করে চোর বলি, এটাই আমার অওকাদ।’ অশোকের কথায়, ‘‘আমার মনে হচ্ছে, তৃণমূলের আইটি সেল থেকে এই আক্রমণ করা হচ্ছে।’’ তবে এখনই পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন না তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘এই সব মন্তব্য আমরা উপেক্ষা করছি। যাঁরা এমন করছেন, তাঁদের রুচিকে ধিক্কার জানাই।’’
তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের নেতা তথা গোবরডাঙার পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন বলেন, ‘‘এ সব মন্তব্যের সঙ্গে আমাদের দলের সম্পর্ক নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটির সাফল্যে আমরা উচ্ছ্বসিত, গর্বিত। তবে একটি বাচ্চা মেয়ে যদি রাজ্য সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে, যে মাটিতে জন্মেছে তাকে অস্বীকার করে, তাতে মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তো হবেই!’’ তিনি অশোকের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে তাঁকে কটাক্ষও করেছেন।
শুক্রবার প্রেরণাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। অশোক সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমার জানার দরকার নেই উনি এবিটিএ বা সিপিএম করেন কি না। উনি যদি সমাজ সম্পর্কে সচেতন হন, চারদিকে যা চলছে তা দেখেশুনে খেপে ওঠেন— তা হলে খুশিই হব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy