Advertisement
E-Paper

medicine price: ওষুধের দামের ঘূর্ণিতে পাক খাচ্ছে আমজনতা

ফলে যাঁদের দৈনিক উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, কোলেস্টেরল এবং হার্টের ওষুধ খেতে হয়, তাঁরা বিপাকে। ওই রোগীর এখন মাসে ওষুধ কিনতে যদি দু’হাজার টাকা খরচ হয়, আগামী দিনে সেটা অন্তত ২২০০ টাকাতে গিয়ে দাঁড়াবে।

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫৩
Share
Save

ভাতের পাতে টান তো আগেই পড়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধটুকু খেতেও প্রাণান্ত মানুষের। জ্বর-ব্যথার জন্য সাধারণ প্যারাসিটামল থেকে শুরু করে গ্যাস, পেটের সমস্যা, হৃদরোগ, অ্যান্টিবায়োটিক, রক্তাল্পতা, ত্বকের ওষুধ কিনতে সাধারণ মানুষের বাজেট হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।

ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (এনপিপিএ) গত ১ এপ্রিল থেকে ৮৫০টি অত্যাবশ্যক ওষুধের দাম সর্বোচ্চ প্রায় ১০.৮ শতাংশ বাড়ানোর ছাড়পত্র নির্মাতা সংস্থাগুলিকে দিয়েছে। ফলে যাঁদের দৈনিক উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, কোলেস্টেরল এবং হার্টের ওষুধ খেতে হয়, তাঁরা বিপাকে। ওই রোগীর এখন মাসে ওষুধ কিনতে যদি দু’হাজার টাকা খরচ হয়, আগামী দিনে সেটা অন্তত ২২০০ টাকাতে গিয়ে দাঁড়াবে। কারণ, এনপিপিএ-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নতুন দামের ওষুধ মাসখানেকের মধ্যেই বাজারে আসবে।

অত্যাবশ্যক ওষুধের দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে কম্বিনেশন ওষুধেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। কেন্দ্রের তরফে অত্যাবশ্যক ওষুধের এক-একটি উপাদানের সর্বোচ্চ দাম কত হবে, সেটি বেঁধে দেওয়া থাকে। কিন্তু দু’টি মিলিয়ে তৈরি ওষুধের দাম কত হবে, বলা থাকে না। ফলে, অনেক প্রস্তুতকারী সংস্থাই দু’টি উপাদান মিলিয়ে কম্বিনেশনের ওষুধের দাম বাড়িয়ে রাখেন। যেমন, ‘প্যানটোপ্রাজল’ এবং ‘ডোমপেরিডন’ –মিলিয়ে তৈরি গ্যাসের ওষুধ রয়েছে। কেন্দ্র উপাদানের দাম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ বহু রোগের ক্ষেত্রেই এমন কম্বিনেশন ওষুধ রয়েছে। সেগুলির দাম এমনিতেই বেশি থাকে। তার উপরে বিভিন্ন প্রস্তুতকারী সংস্থার বিভিন্ন রকমের দাম। ফলে রোগী অনেক সময়ই বুঝতে পারেন না, ঠিক দাম কোনটা।’’

তবে দু’টি উপাদানের মিশ্রিত ওষুধ কিংবা ফর্মুলা বদল করে ওষুধ তৈরি করে কিছু প্রস্তুতকারী সংস্থা যে দাম বাড়াচ্ছে, তা সম্প্রতি নজরে আসে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ামক সংস্থার। সেই মতো কম্বিনেশন ও ফর্মুলেশন বদলানো এমন ২৩টি ওষুধের দাম সর্বোচ্চ কত পর্যন্ত হতে পারবে, তা বেঁধে দিয়েছে এনপিপিএ।

আবার চিকিৎসকদেরও অনেকেই জেনেরিক নামে ওষুধ না লিখে ব্র্যান্ড নাম লেখেন। এক ওষুধ বিক্রেতার কথায়, ‘‘অনেক সময়ই আমরা প্রেসক্রিপশন দেখে বলি, এই নামের ওষুধটা হচ্ছে না। অন্যটা দিলে চলবে? অর্থাৎ সেটি অন্য সংস্থার তৈরি। আর দু’টির মধ্যে দামের কিছুটা পার্থক্য তো থাকেই। ফলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় তো পড়ছেনই। ’’

অত্যাবশ্যক ওষুধেরই এই দশা! আর তার বাইরে যে বাকি ওষুধগুলি রয়েছে, তার দাম প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে বাড়ানোর জন্য আগাম ছাড়পত্র দেওয়াই থাকে। কোন প্রস্তুতকারী সংস্থা কতটা দাম বাড়াবে, তা নির্ভর করে তাদের উপরে। ফলে ওই সমস্ত ওষুধের দামও বিভিন্ন রকমের হয়। ন্যাশনাল ফেডারেশন অব সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভস সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক আশিসকুসুম ঘোষের অবশ্য দাবি, ওষুধের দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে কাঁচামালের জোগানের সমস্যা। আগে ওষুধের কাঁচামাল দেশে তৈরি হত। কিন্তু এখন প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রায় একশো শতাংশই বেসরকারি। তিনি বলেন, ‘‘ভারতকে ওষুধের হাব বলা হয়। কারণ, এখান থেকে অন্তত ২০০টি দেশে ওষুধ সরবরাহ হয়। দেশে কাঁচামাল অমিল হওয়ার পরে, চিন থেকে সস্তায় তা পাওয়া যেত। উড়ানে এলে প্রতি কেজিতে ৫-১০ ডলার খরচ বেশি হওয়ায় কাঁচামাল আসত জাহাজে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এবং সীমান্তে সমস্যার কারণে চিন থেকে কাঁচামালের জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ২০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তা না করে কেন্দ্র তা ১০.৮ শতাংশ করেছে।

পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির সূচকের নিরিখে এক ধাক্কায় ১০.৮ শতাংশ পর্যন্ত ওষুধের দাম বৃদ্ধি, জনস্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলবে বলেই মত রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসকদের। চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘রোজগার বাড়েনি। বদলে দৈনন্দিন সব জিনিসের দাম বাড়ছে। সেই পরিস্থিতিতে ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাবেন।’’ সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-র সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটার কথায়, ‘‘দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ ষাটোর্ধ্ব। প্রত্যেককে যদি দৈনিক একাধিক ওষুধ খেতে হয়। খরচ প্রায় ১১ শতাংশ বাড়লে তা বড় ধাক্কা তো বটেই।’’

medicine Price rise

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।