অযোধ্যার রামমন্দিরে রামের মূর্তি তৈরি করেছেন মহম্মদ জামালউদ্দিন (ইনসেটে)। —নিজস্ব চিত্র।
আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হতে চলেছে। সব ঠিক থাকলে মন্দিরে বসতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের মৃৎশিল্পী মহম্মদ জামালউদ্দিন ও তাঁর ছেলে বিট্টুর তৈরি করা ১৬ ফুটের দু’টি ফাইবারের রামের মূর্তিও।
জামালের কথায়, ‘‘আমার তৈরি রামের মূর্তি অযোধ্যার মন্দিরে স্থাপন হবে। এটা আমার কাছে বড় পাওনা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনও জায়গা নেই। এর ঊর্ধ্বে গিয়ে আমরা কাজ করব।’’
দত্তপুকুরের দিঘার মোড় এলাকার বাসিন্দা জামালউদ্দিন। বাড়ির সামনেই কারখানা। তাঁদের তৈরি মূর্তি দু’টির একটি পাড়ি দিয়েছে মাস আটেক আগে। অন্যটি মাস দেড়েক। কিন্তু কী ভাবে মিলল বরাত?
জামালউদ্দিন জানান, মূর্তি বানানো শিখে হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে তালিম নিয়ে সেখানে কাজ করেছেন বেশ কয়েক বছর। পরে দত্তপুকুরের পালপাড়ায় মৃৎশিল্পের পসার বাড়লে বাড়ির সামনে তৈরি করেন কারখানা। দুর্গা, কালী থেকে নানা দেবদেবীর মূর্তি ফাইবার ও মাটি দিয়ে তৈরি করতে থাকেন তিনি। ছেলেও কাজ শেখেন। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন রাজ্যে তাঁদের হাতের কাজ ছড়িয়ে পড়ে।
দু’বছর আগে তাঁর উত্তরপ্রদেশের এক বন্ধু জামালকে রামের মূর্তি বানানোর কথা বলেন। রাজি হতেই রাম মন্দির ট্রাস্টের কর্মকর্তারা আসেন দত্তপুকুরে। ১৬ ফুট উচ্চতার দু’টি মূর্তি তৈরির বরাত দেন তাঁরা। মূর্তি দু’টি কেমন হবে, হাতে আঁকা সেই নকশাও দিয়ে যান। সেই মতো ছেলেকে নিয়ে দেড় বছর ধরে দু’টি মূর্তি বানান জামালউদ্দিন।
শিল্পী বলেন, ‘‘মূর্তি দু’টি বানিয়ে পারিশ্রমিক হিসাবে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি। মন্দির কমিটি কয়েক দিন আগে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে বসানো হবে মূর্তি দু’টি। বসানোর ভিডিয়ো আমাকে পাঠানো হবে।’’
জামালউদ্দিনের এই বরাতপ্রাপ্তিতে আশার আলো দেখছেন দত্তপুকুরে যশোর রোডের দু’ধারের ছোট ছোট কারখানা চালানো মৃৎশিল্পীরা। তাঁরা মনে করছেন, এতে তাঁদের এলাকার নাম ছড়িয়ে পড়বে। তাঁদের দাবি, দেশ জুড়েই এই শিল্পের চাহিদা প্রচুর। তবে, কলকাতার কুমোরটুলিতে বিভিন্ন মূর্তির যা দাম, তার তুলনায় দত্তপুকুরে অনেকটাই কম। এতে লাভ বেশি হয় না।
বারাসতের তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী কুর্নিশ জানিয়েছেন জামালউদ্দিনকে। তিনি বলেন, ‘‘এক জন শিল্পী হয়ে বলব, আমাদের কাছে কাজই ধর্ম। জামাল রামের মূর্তি বানিয়ে প্রকৃত শিল্পীর পরিচয় দিয়েছেন।’’
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তুহিন মণ্ডল বলেন, ‘রাম রাজত্বে কর্মই প্রাধান্য পেয়েছিল। রামমন্দির নির্মাণেও সেই পরম্পরা মানা হয়েছে। এখানে ধর্ম ও রাজনীতি দেখা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy