Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar Medical College And Hospital Incident

‘সবার উপরে মানুষ সত্য’, বাস্তিলের পতন, অনুচ্ছেদ ২১-এর পরে চণ্ডীদাসের ‘শরণে’ সাংসদ সুখেন্দু

আরজি কর-কাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবিতে মেয়েদের রাত দখল কর্মসূচির দিনে প্রথম সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। এর পরে তা ধারাবাহিক ভাবে চলছে।

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৮
Share: Save:

আরজি করের চিকিৎসক-ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে বুধবার রাত দখলের কর্মসূচিতে তিনি ছিলেন দিল্লির মানববন্ধনে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের এক্স পোস্টে দেখা গেল মধ্যযুগের কবি চণ্ডীদাসের পদাবলী-মাধুর্য্য। ইংরেজি এবং বাংলায় লেখা পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘শুনহ মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই— মধ্যযুগের মানবতাবাদী বাঙালি কবি চণ্ডীদাস।’’

১৪ অগস্ট ছিল প্রথম রাত দখল কর্মসূচি। ঠিক তার আগে ওই কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছিলেন, তিনি মেয়ের বাবা, নাতনির দাদু। তাই তিনি মনে করেন, এই সময়ে প্রতিবাদে শামিল হওয়াটা জরুরি। ১৪ তারিখ দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কে নেতাজি মূর্তির সামনে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্নাতেও বসেছিলেন সুখেন্দু। এর পরে নিজের দলের ‘অস্বস্তি’ বাড়িয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার দাবি জানিয়েছিলেন সিবিআইয়ের কাছে।

ওই পোস্টেই কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াড নিয়েও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, আরজি করের ঘটনার তিন দিন পর ডগ স্কোয়াড গিয়েছিল হাসপাতালে। কেন এই বিলম্ব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সুখেন্দু। এর পরেই ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে কলকাতা পুলিশ সুখেন্দুকে লালবাজারে ডেকে পাঠায়। যদিও তিনি হাজির হননি। পরে কলকাতা হাই কোর্টে সুখেন্দু স্বীকার করে নেন, আরজি কর-কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে ভুল তথ্য ছিল। উচ্চ আদালতে নিজের ভুল স্বীকার করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট মুছে দেওয়ার কথা জানান সুখেন্দু। হাই কোর্টে তিনি জানান, তথ্যগত কিছু বিভ্রান্তির কারণে ওই পোস্ট করা হয়েছিল। সেটি মুছে ফেলা হবে। এর পরে সমাজমাধ্যমে আবার একটি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ পোস্ট করেছিলেন সুখেন্দু। ভারত-চিন যুদ্ধের সময়ে প্রকাশিত একটি কার্টুন শেয়ার করেন তিনি। কার্টুনটি ১৯৬২ সালের ২৬ ডিসেম্বরের। কার্টুনিস্ট আরকে লক্ষ্মণের আঁকা ছবিতে দেখা যায়, পুলিশ এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তলায় লেখা, ‘‘এটা ঠিক যে, আপনি গুজব ছড়াচ্ছিলেন না। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি সঠিক তথ্য ছড়াচ্ছিলেন।’’ পুরনো সেই কার্টুনটি নিজের এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করেন সুখেন্দুশেখর। সঙ্গে একটি অট্টহাসির ইমোজি।

এর পর গত ১ সেপ্টেম্বর সুখেন্দু এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে মনে করিয়েছিলেন বাস্তিল দুর্গের পতনের কথা। সুখেন্দু লেখেন, ‘‘১৭৮৯ সালের জুলাই...। বিক্ষোভকারীরা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিলেন বাস্তিল দুর্গ। জন্ম হয়েছিল ঐতিহাসিক ফরাসি বিপ্লবের।’’ প্রসঙ্গত, ১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই উন্মত্ত ফরাসি জনতা ভেঙে দেয় প্যারিসের বাস্তিল দুর্গ। তার পরেই শুরু হয় ফরাসি বিপ্লব। এই বাস্তিল দুর্গ ছিল রাজতন্ত্র, ইউরোপে মধ্যযুগীয় শোষণের প্রতীক। প্রশ্ন ওঠে, ইউরোপের সেই শোষণের যুগের সঙ্গে কি পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা টানতে চাইছেন সুখেন্দুশেখর?

এর পরে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘রাতের দখল নেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ থাকা নাগরিকদের সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারও চাই।’’ সংবিধান মনে করিয়ে তিনি তৃণমূল শাসিত বাংলায় মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে বার্তা দিতে চাইছেন কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। তা থিতিয়ে যাওয়ার আগেই বুধ-রাতের প্রতিবাদের পর তৃণমূলের প্রতিবাদী সাংসদের লেখায় এল পদাবলী-মাধুর্য্যের ১৫৬ নম্বর পঙ্‌ক্তি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy