সামনে দেখা দিচ্ছেন না কেউ। কিন্তু, আড়ালে থেকেই তাঁদের ‘মুকুলদা’র সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। পার্টি অফিসে, চায়ের দোকানে, পার্ক-ফুটপাতের আড্ডায় এটাই শোনা যাচ্ছে। বাতাসে ভাসছে, অমুক দাদা তো ‘মুকুলদা’র হাত ধরলেন বলে! কোথাও শোনা যাচ্ছে, দক্ষিণের আর এক দাদার সঙ্গে নাকি কথা হয়ে গিয়েছে, সদলবলে এক যুবনেতাও দল ছাড়তে চলেছেন।
কোচবিহারের রাসমেলা চত্বর থেকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডের তৃণমূলের আড্ডা, যেখানেই কান পাতা যাচ্ছে এমন নানা কিছু শোনা যাচ্ছে। শুক্রবার মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পরে এমনই এক আড্ডায় কয়েকজন তৃণমূল নেতাকে হাততালি দিতেও দেখা গিয়েছে।
কিন্তু, প্রশ্ন করলে সকলেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা দিদির সঙ্গেই থাকবেন।
আরও পড়ুন: মুকুল বড় নেতা নন, মন্তব্য দিলীপের
ঘটনা হল, উত্তরবঙ্গে মুকুল অনুগামীদের একাংশ অতীতেও এমনই আড়ালে থেকেই কাজ করেছেন। সে যাত্রায় মুকুলবাবু নতুন দল গড়ার জন্য এগোনোর আগে শিলিগুড়িতে পৌঁছলে তাঁর জন্য টিফিন বাক্সে খাবার পৌঁছে গিয়েছিল। স্টেশনে সারি দিয়ে গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। কার বাড়িতে খাবার তৈরি হয়েছিল, কারা একাধিক গাড়ি ভাড়া করে দিয়েছিলেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চর্চা ফের বেড়ে গিয়েছে।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, শিলিগুড়ির এক কাউন্সিলর তাঁকে দিনের পর দিন গুরুত্বহীন করে রাখার অভিযোগে ঘনিষ্ঠ মহলে ইদানীং বারেবারেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের একদল উঠতি নেতাও তাঁদের কোনও কাজকর্ম করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে নিয়ম করে কলকাতার নেতাদের কাছে অভিযোগ করছেন। ওই নেতাদের একাংশ মুকুলবাবুর একান্ত ঘনিষ্ঠ বলেই দলে পরিচিত। তৃণমূলে থেকেই মুকুলবাবুর ‘দুঃসময়ে’ আড়াল থেকে তাঁরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলে দলের অনেকেই একান্তে মানছেন। দলের নেতাদের কাছে খবর গিয়েছে, মুকুলবাবু দল ছাড়তেই বিজেপির সঙ্গে ক্ষুব্ধ নেতাদের কথা চালাচালি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘রাজনীতিতে এক দলের নেতা অন্য দলের নেতার সঙ্গে কথা চালাচালি করতেই পারেন। এটা সৌজন্যের ব্যাপার। এটা বলতে পারি, অনেকেই যোগাযোগ রাখছেন। বাকিটা সময়ই বলবে।’’
তবে তৃণমূল শিবিরের অনেকেই এটা মানছেন, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে কোণঠাসা হয়ে থাকা নেতা-কর্মীদের একাংশ মুকুলবাবুর সঙ্গে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ শুরু করেছেন। জলপাইগুড়ির এক তৃণমূল নেতা জানান, গুজরাতে ভোটের ফলের উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করবে। উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল রাজনীতিতে কিছুটা ব্রাত্য হয়ে হয়ে পড়া এক নেতা জানান, অবিলম্বে দলের প্রদেশ নেতারা ক্ষমতার বিন্যাস না পাল্টালে তাঁরা অনেকেই দল ছাড়ার কথা ভাবতে বাধ্য হবেন।
আবার ইতিমধ্যেই কোচবিহারের মাথাভাঙার ফুলবাড়ি অঞ্চলের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা জয়ন্ত বরকায়েত মুকুলবাবুর হাত ধরার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মুকুলবাবু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ফোন করেছিলেন। আমরা আছি।’’ প্রাক্তন নেতা বলেই হয়তো সামনে দেখা যাচ্ছে। যাঁরা এখনও তৃণমূলের মূলস্রোতের মুখ, তাঁরা কিন্তু আপাতত ‘চলমান অশরীরী’ হয়েই থাকতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy