ফাইল চিত্র।
কোভিড স্বাস্থ্যবিধির অন্যতম প্রধান শর্ত পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুল খোলার পক্ষে মত দিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে রবিবার একটি ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় শিক্ষকদের একাংশ জানালেন, করোনার দাপটে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় আর্থিক ভাবে দুর্বল পড়ুয়ারা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ফারাক তৈরি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও।
প্রাথমিক স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়ারই অনলাইন পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। যে-সব জেলায় করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমে গিয়েছে, সেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে এনে স্কুল খোলা যেতে পারে বলে মনে করেন ‘প্রতীচী’ নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ভার্চুয়াল সভায় যোগ দেওয়া শিক্ষকেরা। মুর্শিদাবাদের লালগোলার এক শিক্ষক জানান, অনেক গরিব পড়ুয়াকে এখন চানাচুর বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। কাউকে কাউকে দেখা গিয়েছে গরু চরাতে। ‘‘ওদের পক্ষে তো কোনও ভাবেই অনলাইনে পড়াশোনা করা সম্ভব নয়। তা হলে ওদের পড়াশোনার বিকল্প ব্যবস্থা কী হতে পারে, তা ভাবতেই হবে,’’ বললেন ওই শিক্ষক।
দার্জিলিং জেলার এক শিক্ষকের পর্যবেক্ষণ, বাচ্চারা সে-ভাবে নিজেদের অসহায়তার কথা বলতে পারছে না। বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে থাকতে থাকতে অনেকের মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ক্রমশই কমছে। অতিমারির মধ্যে আদিবাসীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের কথা বলতে গিয়ে বিপ্লব টুডু নামে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তির আশঙ্কা, ‘‘যে-ভাবে অরণ্য কেটে ফেলা হচ্ছে, তাতে আমাদের এক দিন ছোট ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরতে না-হয়!’’ তাঁর মতে, অতিমারি আবহে জীবনজীবিকা বাঁচাতে অনেক আদিবাসী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক জানান, ‘পাড়ায় পাঠদানের’ মাধ্যমে শিক্ষকেরা ছোট ছোট পড়ুয়ার দল গঠন করে পড়াতে পারেন। এ দিনের আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, অতিমারির মধ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের কথা ভুললে চলবে না। প্রতীচী ট্রাস্টের কর্মী উর্বা চৌধুরীর মতে, ‘‘অতিমারির মধ্যে ক’জন স্কুলছুট হল, জানা যাচ্ছে না। কারণ, স্কুলই তো বন্ধ। অতিমারি মধ্যে বাল্যবিবাহও বেড়েছে।’’
এ দিনের ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ-সহ নানা বিষয়ে সচেতনতার বিস্তার ঘটাতে এবং তাকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ধরে রাখতে প্রতীচীর একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্ম 'সহযোগ'-এর সূচনা হল। ভার্চুয়াল সভায় শিক্ষা ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবেশের অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা জানান, অতিমারিতে প্রান্তিক এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের হাল ফেরানো এবং পরিবেশ রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূল ভিত্তি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু সেটাই সব থেকে বেশি অবহেলিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy