স্কুলের সামনে মাঠে চলছে ক্লাস। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। নিজস্ব চিত্র
অতিমারির দীর্ঘকালীন প্রকোপে সরকারের দ্বিতীয় বারের নির্দেশে স্কুল খোলার সম্ভাবনা থমকে গিয়েছে। দেড় বছরেরও বেশি সময় পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় বিশেষ করে জেলা প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়ারা ক্রমাগত পিছিয়েই চলেছে। এই অবস্থায় প্রাথমিক স্কুলের অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিজেদের উদ্যোগে কোভিড বিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের মুখোমুখি বসিয়ে পড়াতে শুরু করেছেন। কোথাও স্কুলের মাঠে, কোথাও আবার স্কুলভবনেরই খোলা বারান্দায় চলছে অফলাইন ক্লাস।
সোমবার এমন দৃশ্যের সাক্ষী রইল বিভিন্ন জেলার কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হণ্ডা জানান, বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলে মূলত চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে এসেছে। কোভিড বিধি মেনে, মাস্ক পরে পড়িয়েছেন শিক্ষকেরা। মাস্ক পরছে এবং অন্যান্য বিধি মানছে পড়ুয়ারাও। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই উদ্যোগে দৃশ্যতই খুশি অভিভাবকেরাও।
আনন্দবাবু জানান, সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় দু’টি প্রাথমিক স্কুলের বারান্দায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়েছেন শিক্ষকেরা। পড়ুয়াদের মুখে ছিল মাস্ক। তাদের বসতে দেওয়া হয়েছে দূরত্ব-বিধি মেনেই। অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে স্কুলের মাঠে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস নিয়েছেন শিক্ষকেরা। মাঠের মধ্যে শতরঞ্চি বিছিয়ে বসানো হয়েছিল পড়ুয়াদের। পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনাও। হিঙ্গলগঞ্জের একটি প্রাথমিক স্কুলের মাঠেই নিয়ে আসা হয়েছিল ব্ল্যাক বোর্ড। শ্রেণিকক্ষের মতো করেই পড়া বুঝিয়ে দিয়েছেন শিক্ষকেরা।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গঙ্গাসাগরে যদি লক্ষ লক্ষ মানুষের মেলা হতে পারে, বদ্ধ হলঘরে ২০০ জনকে নিয়ে যদি চলতে পারে বিয়ের বাড়ির অনুষ্ঠান, তা হলে করোনা বিধি মেনে স্কুলের খোলা মাঠে বা খোলা বারান্দায় পড়ানো যাবে না কেন— প্রশ্ন আনন্দবাবুর। তিনি বলেন, “করোনার তৃতীয় ঢেউয়েরও দাপট কমছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা দ্রুত স্কুল খোলার দাবি জানাচ্ছি। প্রাথমিক স্কুল চালু না-করার প্রতিবাদে আমরা ‘চলো স্কুলে পড়াই’ কর্মসূচি নিয়েছি। স্কুল চালু করার দাবি জানিয়ে শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপিও দেব।” অভিভাবকদেরও একটি বড় অংশের বক্তব্য, দিনের পর দিন বাড়িতে বসে থেকে ছেলেমেয়েরা শুধু যে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে, তা নয়। তাদের অনেকের মানসিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা না-হওয়ার ব্যাপারটা বিরূপ প্রভাব ফেলছে শিশু-কিশোরদের মনে। সব মিলিয়েই অবিলম্বে স্কুল খুলে দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিদেশে, এমনকি ভারতেরও বহু জায়গায় স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। স্কুল বন্ধ রাখার আর যুক্তি নেই বলে বিশ্ব ব্যাঙ্ক কর্তারও অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy