Advertisement
E-Paper

দীপার উত্থানে কী ইঙ্গিত, কংগ্রেসে ভারসাম্য-চর্চা

রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হয়েছিলেন সম্প্রতি। এর পরে তাঁকে এআইসিসি-র নতুন সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

Deepa Dasmunsi

দীপা দাশমুন্সি। —ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:২১
Share
Save

লোকসভা নির্বাচনে জোট সংক্রান্ত রণকৌশল কী হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। এরই মধ্যে দলের ভারসাম্যে পরিবর্তন ঘিরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে বাংলার কংগ্রেসে। রাজ্যের নেত্রী ও প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সির গুরুত্ব বাড়িয়ে এই চর্চার সূত্রপাত ঘটিয়েছে এআইসিসি। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কাছে অধীর চৌধুরীর পাশাপাশিই এখন গুরুত্বপূর্ণ নাম দীপার। কংগ্রেসের অন্দরেই চর্চা শুরু হয়েছে, সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত কি ভবিষ্যতের জন্য কোনও ইঙ্গিত বহন করছে?

রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হয়েছিলেন সম্প্রতি। এর পরে তাঁকে এআইসিসি-র নতুন সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এআইসিসি-র তরফে পর্যবেক্ষক হিসেবে ভার পেয়ে পরপর দুই বছরে হিমাচল প্রদেশ ও তেলঙ্গানায় কাজ করেছেন দীপা এবং দুই রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে কংগ্রেস সরকার গড়েছে। তেলঙ্গানার সাফল্যের পরেই এআইসিসি দীপাকে সাধারণ সম্পাদকের পদে এনে লোকসভা নির্বাচনের আগে কেরল ও লক্ষদ্বীপের দায়িত্ব দিয়েছে। সেই সঙ্গে আছে তেলঙ্গানার দায়িত্বও। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের নেতা রাহুল গান্ধী এবং এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেনুগোপাল এখন দীপার মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

কংগ্রেসের সর্বভারতীয় স্তরে এই ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে বাংলার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই ঠিকই। কিন্তু এ রাজ্যের কংগ্রেসের একাংশ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বে পরিবর্তন চাইছেন বেশ কিছু দিন ধরেই। দলের অন্দরের আলোচনায় এআইসিসি-র নেতারা এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের ‘বিকল্প’ খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। পরিস্থিতির চাপেই তাঁকে লোকসভায় দলের নেতা, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান এবং প্রদেশ সভাপতি— একাধিক দায়িত্ব একসঙ্গে সামলাতে হচ্ছে। দলের একাংশের ধারণা, এমতাবস্থায় দীপার গুরুত্ব বাড়িয়ে ভবিষ্যতে নানা সম্ভাবনার দরজা খুলে রাখা হল। যদিও দলেরই অন্য অংশ আবার এখনই অন্য কোনও বার্তা পড়তে নারাজ। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে আর মাস দুই-তিন সময় বড় জোর বাকি। এই সময়ে প্রদেশ নেতৃত্বে কোনও রদবদলের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভোটের পরে কী হবে, সেটা পরের কথা।’’

দক্ষিণের তেলঙ্গানার পাশাপাশি দীপা দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন কেরলে, যেখানে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের দুই শরিক কংগ্রেস ও সিপিএমের মুখোমুখি লড়াই হবে লোকসভা নির্বাচনে। এই মুহূর্তে সে রাজ্যে কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা পরস্পরকে তীব্র আক্রমণ করছেন। কংগ্রেসের একাংশের বক্তব্য, তারিক আনোয়ারের পরিবর্তে এই সময়ে এআইসিসি দীপাকে কেরলের ভার দিয়েছে সে রাজ্যর উত্তেজনা খানিকটা প্রশমিত করার জন্য। বামেদের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন নেই কিন্তু কাজিয়ায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণ রেখে চলতে চান এআইসিসি নেতৃত্ব, এমনই মত
দলের ওই অংশের।

কেরলের মতোই ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের মধ্যে তিক্ত সমীকরণ রয়েছে বাংলাতেও। এআইসিসি-র শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেসের বাছাই করা নেতাদের আলোচনায় ছিলেন দীপাও। তাঁর বক্তব্য ছিল, সেই ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে জোটের নামে কংগ্রেসের দাবিকে বারবার অগ্রাহ্য করা হয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল কংগ্রেস আরও পরিকল্পিত ভাবে কংগ্রেসকে ভেঙেছে। দীপার প্রস্তাব, রাজ্যে যার সঙ্গেই শেষ পর্যন্ত জোট হোক, কলকাতার পার্শ্ববর্তী এলাকা তথা দক্ষিণবঙ্গে আসন নিয়ে কংগ্রেসকে লড়তে হবে। একই মত শোনা গিয়েছে রাজ্যের আরও কিছু নেতার মুখেও।

সূত্রের খবর, সব শুনে রাহুল বলেছেন, কংগ্রেসের ২৪-২৫% ভোট আছে, এমন জায়গার দলীয় নেতারাও অনেক সময়ে বেশি ভাবনা-চিন্তা করেন না। যে দিকে গেলে আশু লাভ হবে, তার পক্ষে মত দিয়ে দেন। কিন্তু বাংলায় কংগ্রেসের ভোট ৩-৪% হয়ে গেলেও রাজ্যের নেতারা যে ভাবে দল ও সংগঠনের ভবিষ্যৎ, কর্মীদের মনোভাব নিয়ে ভাবেন,
তা প্রশংসনীয়!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Deepa Dasmunsi Congress

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}