জলমগ্ন বাঁকুড়া এবং বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকা। —নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের জেরে গত দু’দিন লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন বিভিন্ন জেলা। বাঁকুড়া, বীরভূমের প্রায় সব নদীর জলস্তর বেড়েছে। অনেক জায়গায় কিছু নদীর জল বিপদসীমার উপরে, আবার কোথাও বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে প্লাবনের আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন।
নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই বাঁকুড়ায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বেড়েছে বৃষ্টির পরিমাণ। রবিবারও আবহাওয়া পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই। টানা ভারী বৃষ্টিতে দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী, কংসাবতী, ভৈরৌবাঁকি-সহ বাঁকুড়ার উপর দিয়ে বয়ে চলা সবক’টি নদীরই জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর যার জেরে বাঁকুড়ার একাধিক কজ়ওয়ে জলের তলায়। কজ়ওয়ের উপর দিয়ে বেগে জল বইতে থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশ কিছু রাস্তা। বিপদের আশঙ্কায় বেশ কিছু সেতু এবং কজ়ওয়ের উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার রাত থেকেই জলের তলায় চলে যায় বাঁকুড়া শহর লাগোয়া মীনাপুর কজ়ওয়ে। তার উপর দিয়ে যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। বাঁকুড়া জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে খবর। শুধু দ্বারকেশ্বর নয়, গন্ধেশ্বরী নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় মানকানালি সেতুও জলের তলায়। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ওই সেতু দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। সিমলাপালের কাছে শিলাবতী নদীর সেতুর উপর দিয়েও জল বইতে থাকায় রবিবার সকাল থেকে ওই সেতু দিয়েও যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে। সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকার। রবিবার দুপুরেও বাঁকুড়া জেলায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
টানা বৃষ্টির জেরে জল বেড়েছে বীরভূমের প্রায় সবক’টি নদীতে। ময়ূরাক্ষী নদীর তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কিউসেক জল। পাশাপাশি, ময়ূরাক্ষী নদীর জল বৃদ্ধির কারণে সাঁইথিয়ার অস্থায়ী ফেরিঘাটটি ভেঙে পড়েছে। এর ফলে যাতায়াতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। শুধু ময়ূরাক্ষী নয়, অজয় নদের জলস্তরও বেড়েছে। পাশাপাশি, জেলার বিভিন্ন ছোট নদীতেও জলবৃদ্ধি শুরু হয়েছে। কোথাও নদীর জল বিপদসীমার উপরে, আবার কোথাও বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে যদি আরও বৃষ্টি হয়, তা হলে জেলায় প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।
অন্য দিকে, ময়ূরাক্ষী নদীর জল বৃদ্ধির কারণে সাঁইথিয়ার অস্থায়ী ফেরিঘাটটি ভেঙে পড়েছে, যার ফলে যাতায়াত একে বারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই ফেরিঘাটটি মূলত সাঁইথিয়া থেকে ময়ূরেশ্বর, তারাপীঠ, রামপুর এবং বহরমপুরের মতো এলাকায় যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হত। এখন ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিকল্প পথে চলাচল করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যদি পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয়, তবে ঝাড়খণ্ডের ম্যাসাঞ্জর ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়া হতে পারে, যা বন্যার আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy