Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভিন্ রাজ্যে ছেলে, উদ্বেগে পরিবার

কোচবিহারের বাণেশ্বরের বাঁধন ভৌমিক যেমন বলছেন, এ বার ছেলে এলে আর তাঁকে যেতে দেবেন না। তাঁর ছেলে সন্দীপ জম্মুতে একটি হোটেলে চাকরি করেন।

ফোনে ছেলের খোঁজ নিচ্ছেন বাঁধন। নিজস্ব চিত্র

ফোনে ছেলের খোঁজ নিচ্ছেন বাঁধন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১১
Share: Save:

এক দিকে টানাটানির সংসার। আর এক দিকে, চাকরি করতে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া ছেলের জন্য দুশ্চিন্তা। বাংলার জেলায় জেলায় এই টানাপড়েনে পড়েছে বহু পরিবার।

কোচবিহারের বাণেশ্বরের বাঁধন ভৌমিক যেমন বলছেন, এ বার ছেলে এলে আর তাঁকে যেতে দেবেন না। তাঁর ছেলে সন্দীপ জম্মুতে একটি হোটেলে চাকরি করেন। কাশ্মীরের খবর পেয়েই ফোনে ছেলের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিন্ত হন। বাঁধন জানান, তাঁরা বরাবর চেয়েছিলেন, ছেলে বাড়িতে থেকেই চাকরি করুক। কিন্তু ভিন্ রাজ্যে ভাল চাকরি পাওয়ার পরে ছেলের স্বপ্নপূরণে বাধা হতে চাননি । সামনের মাসেই ছেলের ফেরার কথা। বাঁধনের স্ত্রী মিঠু বলেন, ‘‘যে ভাবে হোক ঠিক চলে যাবে। ছেলেকে আর দূরে যেতে হবে না।’’

এতটা জোর অবশ্য দেখাতে পারছেন না উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার ঘরধাপ্পা গ্রামের অনেক পরিবার। এই গ্রামের জাকির, মেহবুব, ফিরোজ, শামিম-সহ ১২ যুবক কুলগামের একটি আপেল বাগানের কাজ ছেড়ে ফিরে এসেছিলেন। কিছু দিন পরে ফেরেন কাশিম, জামিল, নিজাবুল-সহ ৭ জন। কাশিম, জাকির আর মেহবুব সম্প্রতি পঞ্জাবে গিয়েছেন। কাশিমের বাবা মোস্তাফা বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করেও এলাকায় কাজ পায়নি। চলবে কী করে?’’

ইসলামপুরের শ্রম দফতরের আধিকারিক শেখ নৌসাদ আলমই জানান, এলাকার কত জন ভিন্ রাজ্যে কাজ করছেন, তার কোনও নথি নেই। তিনি বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে গেলে নাম নথিভুক্তের জন্য বারবার বলা হচ্ছে। তাতে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুযোগ সুবিধাগুলো পরিবারের লোকজনরা পাবেন। কিন্তু কেউ করেন না।’’

দিনমজুরির কাজে বীরভূমের পাইকর থেকে কাশ্মীরে যাওয়া শ্রমিকদের পরিজনদের অনেকে রবিবার থেকে ওঁদের ফোনে পাননি। কেউ আপেল বাগানে, কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউবা পশুচারণের কাজ করেন। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, শুধু পাইকর থানার ন’টি পঞ্চায়েতের পাটাগাছি, নয়াগ্রাম, মিত্রপুর, কাশিমনগরের মতো এলাকা থেকেই কয়েক’শো লোক কাজ করেন কাশ্মীরে। নয়াগ্রামের ১২ জন শ্রমিক বারামুলায় কাজ করেন। নয়াগ্রামের শ্রমিকেরা মাস তিনেক আগে, ইদে বাড়ি এসেছিলেন। গ্রামের ধানজমিতে চাষ করে, মাসখানেক বাড়িতে কাটিয়ে আবার কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছেন।

ভূ-স্বর্গে কাজ করেন বলে এমনিতেই চিন্তা থাকে। সদরুল শেখের স্ত্রী টগরি বিবি বলছেন, ‘‘এর মাঝে রবিবার থেকে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ। কী অবস্থায় আছে, কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। এ দিনও পাগলের মতো ফোন করেছি। একবারও পাইনি।’’

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, বীরভূমের কেউ কাশ্মীরে আটকে আছেন, এমন খবর নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Terrorist Attack Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy