Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Sandeshkhali Incident

সিবিআই-শিবিরে অভিযোগের ভিড়

স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্যা, সমিতিরই এক দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সন্দেশখালি থানায়।

সন্দেশখালিতে মহিলাদের প্রতিবাদ।

সন্দেশখালিতে মহিলাদের প্রতিবাদ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ০৮:০৯
Share: Save:

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভিড়। শনিবার, সন্দেশখালির ধামাখালিতে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে প্রথম দিনেই বহু অভিযোগ দায়ের হল। সূত্রের দাবি, শতাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। জমি দখল-সহ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তো আছেই।

যে দুই মহিলা সদ্য নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে, তাঁরাও এ দিন শিবিরে অভিযোগ জানান। তাঁদের মধ্যে বিজেপি ঘনিষ্ঠ মহিলা পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেন অভিযুক্তরা গ্রেফতার হল না, তার উত্তর পুলিশ সুপার এবং এসডিপিওকে দিতে হবে।”

স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্যা, সমিতিরই এক দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সন্দেশখালি থানায়। সেই নেত্রীও এ দিন শিবিরে গিয়ে গোটা ঘটনা জানান। তাঁর স্বামী বলেন, “সিবিআইকে সব ঘটনা জানিয়েছি। নিরাপত্তাহীনতার কথাও বলেছি। শুক্রবার দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয় বাড়ির সামনে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। সে কথাও জানিয়েছি।”

বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলব না। নারী নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত চলছে।”

ধামাখালির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভবনের দোতলায় অভিযোগ জমা নেওয়া হয়। নীচে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। শুধু পাত্রপাড়া থেকেই শিবিরে আসেন ৩০-৪০ জন পুরুষ ও মহিলা। তাঁদের মধ্যে সুমিতা পাত্র বলেন, “স্বামী টোটো চালায়। আমি সন্দেশখালির আন্দোলনে ছিলাম। তাই স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে পুলিশ। পাড়ার তৃণমূল নেতারা ভোটের পরে ঘরছাড়া করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশের উপরে ভরসা নেই।”

সিবিআইয়ের কাছে বেড়মজুর ২ পঞ্চায়েতের বাগদিপাড়ার বাসিন্দারাও আসেন অভিযোগ জানাতে। তাঁদের অভিযোগ, ফেস্টুন ছেঁড়া নিয়ে অশান্তির জেরে পুলিশ দু’জন বিজেপি সমর্থককে তুলে নিয়ে যায়। ২৩ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও হয় বলে দাবি।

শিবিরে বিজেপির নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এসেছিলেন অভিযোগকারীদের আইনজীবী হিসেবে। তিনি বলেন, “জমি-জায়গা সংক্রান্ত অভিযোগের পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সাধারণ মানুষের যা অভিযোগ আছে, তা তাঁরা সিবিআইকে জানিয়েছেন। যে ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করছে, তা-ও তাঁরা জানাচ্ছেন।”

তৃণমূলের সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর পাল্টা দাবি, “বিজেপি চক্রান্ত করে অভিযোগ করাচ্ছে। সব অভিযোগের সঠিক তদন্ত হলে সত্য সামনে আসবে। সন্দেশখালির বেশিরভাগ ঘটনা বিজেপির চক্রান্ত। এখন পুলিশ ও তৃণমূলকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।”

কামারপুকুরের জনসভাতেও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রান্তের প্রসঙ্গ তুলেছেন। বলেন, “সন্দেশখালির যে কলঙ্ক, তা আজীবন মানুষ মনে রাখবে।” কুলতলির সভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘স্টিং ভিডিয়ো’র প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “গঙ্গাধর কয়াল (সন্দেশখালির বিজেপি নেতা) বলেছে, একটি বুথে মদ খাওয়ার জন্য বিজেপি পাঁচ হাজার টাকা খরচ করেছে। তা হলে গোটা রাজ্যে যত বুথ আছে, মদের পিছনে খরচ হবে ৪০ কোটি।” স্টিং অপারেশনের ভিডিয়োয় কণ্ঠস্বর তাঁর নয় বলে সম্প্রতি দাবি করেন গঙ্গাধর।

এ দিন জামিন পেয়ে বেরিয়ে সন্দেশখালির বিজেপি কর্মী পিয়ালি দাস মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেককে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “সন্দেশখালির আন্দোলন অরাজনৈতিক ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়ব না। আমার গ্রেফতারি ভুয়ো ছিল। হাই কোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সবটাই চক্রান্ত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নারী সমাজের কলঙ্ক।” বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রোজ সিবিআই ক্যাম্পে সন্দেশখালির মানুষের ঢল প্রমাণ করে দিচ্ছে কী ঘটেছিল।” যদিও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব দাবি করেছেন, একটা চক্রান্তকে ঢাকতে বিজেপি এখন আরও মিথ্যে বলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Sandeshkhali Incident sandeshkhali CBI TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy