Advertisement
৩০ জুন ২০২৪
Doctor Death

ডাক্তারের মৃত্যুতে তদন্তের দাবি

মঙ্গলবার সকালে বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থে বর্তমান শ্বশুরবাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে দেহ দাহ করে দেওয়া হয়। সেই মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। ছবি: ফেসবুক।

চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। ছবি: ফেসবুক।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৮:৩০
Share: Save:

করোনাকালে গিটার হাতে নিয়ে ‘আমি ডাক্তার-আমি ডাক্তার’ গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগের তরুণ চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। মঙ্গলবার সকালে বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থে বর্তমান শ্বশুরবাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে দেহ দাহ করে দেওয়া হয়। সেই মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী শর্মি চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তাঁদের ছেলেকে বাবার শেষ কাজ করতে দেওয়া হয়নি। চিকিৎসকদের দু’টি সংগঠন অনির্বাণের মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। বৃহস্পতিবার বহরমপুর থানার পুলিশ অনির্বাণের বর্তমান শ্বশুরবাড়িতে যায়। অনির্বাণের শ্বশুর শান্তব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাতে থানায় যান।

শান্তব্রত বলেন, “যে কোনও তদন্ত হতে পারে। আপত্তি নেই। কিন্তু ঘটনার পর থেকে মেয়েকে সামাল দিতে পারছি না। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হচ্ছে। আবার তদন্তের মুখোমুখি হলে হয়তো মেয়েকে বাঁচাতে পারব না।” অনির্বাণের বর্তমান স্ত্রী অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন রাতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান। তবে অনির্বাণের সৎ মা হাসি দত্ত প্রশ্ন তুলেছেন, “আমাদের নিষেধ সত্ত্বেও ছেলের দেহ কেন দ্রুত সৎকার করা হল?” শান্তব্রতর দাবি, “তাড়াহুড়ো করে সৎকারের অভিযোগ ঠিক নয়। অনির্বাণের প্রাক্তন স্ত্রীর ফোন নম্বর আমাদের কাছে ছিল না। তবে তাঁর সঙ্গে যাঁদের যোগাযোগ আছে বলে মনে করেছি, তাঁদের খবর দিয়েছি। অনির্বাণের সৎ মা, দিদি-সহ আত্মীয়েরা এসেছিলেন।”

ময়না-তদন্ত করাননি কেন? শান্তব্রত বলেন, “ডাক্তার স্বাভাবিক মৃত্যুর শংসাপত্র দিয়েছেন। স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য তো ময়না-তদন্ত করাতে হয় না।” অনির্বাণের মৃত্যুর শংসাপত্র লিখেছেন বহরমপুরের হোমিও বিশেষজ্ঞ বিভাস কুণ্ডু। বিভাস বলেন, “আমাকে ওদের বাড়ি থেকে ফোন করার ঘন্টা খানেক পরে গিয়ে মৃতদেহ দেখি। কোনও অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি। হৃদরোগে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাই স্বাভাবিক মৃত্যুর শংসাপত্র দিয়েছি। তাই ময়না-তদন্তের কথা বলিনি।”

অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাড়িতে কারও মৃত্যু হলে সরকারি প্রোটোকল মেনে মৃতদেহ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং পরবর্তী কালে ময়না-তদন্ত করা দরকার। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।” তাঁর দাবি, “আমরা শুনেছি, স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার পরে তারা মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করে। তখন স্থানীয় হোমিওপ্যাথির ডাক্তার তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্র দেন। যে ভাবে তা লেখা হয়েছে, সে ভাবে মৃত্যুর শংসাপত্র লেখা হয় না। তাই বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছি।” আর একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টর ফোরামের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অনির্বাণ, তবু তাঁর দেহ মেডিক্যাল কলেজে এল না। অনেকগুলি প্রশ্ন আসছে। সেগুলি তদন্ত হওয়া দরকার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

doctor Death Murshidabad Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE