মনুয়া মজুমদার।
‘রেডিও জকি’র ভূমিকায় আগেই দেখা গিয়েছিল। এ বার দেখা গেল এক সাময়িকীর সম্পাদকের ভূমিকায়। তিনি বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক মনুয়া মজুমদার।
২০১৭ সালে বারাসতের হৃদয়পুরে নিজের স্বামীকে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল মনুয়ার। সেই ঘটনা সাড়া ফেলে দিয়েছিল সারা রাজ্যে। বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রে খবর, অষ্টমীর দিন একটি সাময়িকী প্রকাশিত হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মুক্তমনে’। সংশোধনাগারের আবাসিকেরা তাতে খোলা মনে নিজেদের কথা লিখেছেন। ‘মুক্তমনে’-র সম্পাদক করা হয়েছে মনুয়াকে। ওই সাময়িকীতে রয়েছে কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ।
কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকাকালীন দফতরের উদ্যোগে শুরু হওয়া ‘দমদম রেডিয়ো’তে রেডিয়ো জকির ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল মনুয়াকে। মহিলাদের ক্রিকেটে স্কোরারের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও সংশোধনাগারে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।’’
কারা দফতর সূত্রে খবর, ‘মুক্তমনে’-র প্রকাশনার নেপথ্যে রয়েছেন বর্ধমান জেলের সুপার সুদীপ বসু। সাময়িকীর প্রচ্ছদ পরিকল্পনাও তাঁর। আপাতত টেবিল-ম্যাগাজিন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল ‘মুক্তমনে’। তবে পরে দফতরের ওয়েবসাইটে সেটির ‘পিডিএফ’ প্রকাশ করার ইচ্ছা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
সংশোধনাগারের জেলার আবদুল্লাহ কামাল সংস্কৃতি জগতের মানুষ। তিনিও ‘মুক্তমনে’-র প্রকাশনার কাজে যুক্ত। কারা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে স্থানান্তরের পরে সেখানেও নানা কর্মসূচিতে যুক্ত থাকার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মনুয়া। মহিলা আবাসিকদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই নিবিড়। বাংলা সাহিত্যে তাঁর দখল রয়েছে। সে কারণে জেল সুপার মনুয়াকে ‘মুক্তমনে’-র সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন।’’
‘মুক্তমনে’র সহ-সম্পাদক করা হয়েছে সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক কবি স্বপন শিকদারকে। কারা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলের ওয়েলফেয়ার অফিসার দেবনারায়ণ মান্ডি বিশ্বভারতীর ছাত্র। শুরু থেকেই ‘মুক্তমনে’-র উৎকর্ষ যাতে বজায় থাকে, তার জন্য কবিতা-প্রবন্ধ ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজ তাঁর নজরদারিতে চলেছে। কিন্ত সামনে রয়েছেন মনুয়া।’’
বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, মনুয়া এখন জেলের মহিলা আবাসিকদের নিয়ে নানা কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকেন। এ বছর জেলে দুর্গাপুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে কেউ আবৃত্তি করেছেন, কেউ গান গেয়েছেন। স্বল্পদৈর্ঘ্যের একটি নৃত্যআলেখ্য পরিবেশিত হয়েছে মহিষাসুর বধ নিয়ে। এক কারাকর্তার কথায়, ‘‘গোটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নেপথ্যে রয়েছেন মনুয়া। তিনি শিল্পীদের তালিম দিয়েছেন। তাঁর পরিচালনাতেই হয়েছে এই অনুষ্ঠান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy