নিহত আসালুন খাতুন (বাঁ দিকে) এবং তাঁর শোকার্ত মা মোস্তারি বেগম। নিজস্ব চিত্র
এনজেপি স্টেশন থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরের তিনমাইল হাটের কাছে রেললাইনের ধার থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল শিশুটিকে। খবরের কাগজে তার ছবি দেখে ভাগ্নিকে চিনতে পারেন উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ এনামুল। মা মোস্তারি বেগমকে নিয়ে শনিবার শিলিগুড়িতে এসেছেন তিনি। এবং এসেই জানতে পারলেন, দিদি আসালুন খাতুনের (২১) মৃত্যু হয়েছে। এনামুলদের অভিযোগ, আসালুন এবং আয়েশাকে ট্রেন থেকে ফেলে খুন করতে চেয়েছে তাঁদেরই পড়শি এবং আসালুনের ‘প্রেমিক’ মহম্মদ সাদ্দাম। আসালুন রেলকর্মী ছিলেন। শিলিগুড়ি এসআরপি অঞ্জলি সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে।’’ অভিযুক্তের খোঁজে বিহারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে রেল পুলিশ।
বুধবার তিনমাইল হাট এলাকায় ছোট্ট আয়েশাকে রেললাইনের মাঝে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন কর্তব্যরত দুই গ্যাংম্যান। তাকে তুলে এনজেপি রেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পর থেকেই তার বাবা-মায়ের খোঁজ চলছিল। এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এ দিন পাঞ্জিপাড়া থেকে রেল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিবার।
আসালুনের ভাই এনামুল জানান, তাঁরা বেলাকোবার আদি বাসিন্দা। কর্মসূত্রে তাঁদের পরিবার কয়েক বছর আগে বিহারের বারসইয়ে চলে যায়। সেখানেই মহম্মদ জিমির সঙ্গে বিয়ে আসালুনের। বিয়ের পর আসালুন রেলে চাকরিও পান। তাঁর পোস্টিং হয় উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ায়। সেখানেই ভাই, মা এবং মেয়েকে নিয়ে থাকছিলেন আসালুন। এনামুলের বক্তব্য, এর মধ্যে স্বামী জিমির মানসিক বিকার শুরু হয়, তাই তিনি দিদির সঙ্গে থাকতেন না। এই সময়ই বারসইয়ের যুবক সাদ্দামের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় আসালুনের। এনামুল বলেন, ‘‘সাদ্দাম ফোন করত দিদিকে। গত সোমবার বেড়াতে যাচ্ছি বলে বেরিয়েছিল। কিন্তু খবরের কাগজে ভাগ্নির ছবি দেখে শনিবার আমি সব জানতে পারি। তার পর এনজেপিতে যোগাযোগ করি। সাদ্দামই দিদি এবং ভাগ্নিকে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়েছিল বলে আমাদের বিশ্বাস।’’
এ দিন দুপুরে এনজেপি আসেন এনামুলরা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে আসালুনের দেহও শনাক্ত করেন তাঁরা। তার পর পুলিশের কাছে আবেদন করেন ছোট্ট আয়েশাকে ফিরে পাওয়ার জন্য।
তবে আয়েশা এখনও পুরোপুরি সুস্থ নয় বলেই জানিয়েছেন রেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুস্থ হলে তাকে জলপাইগুড়ি জেলা শিশুসুরক্ষা কমিটির মাধ্যমেই প্রমাণ দিয়ে ফেরত নিতে হবে এনামুলদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy