প্রতীকী ছবি।
মেদিনীপুর: আবেদনটা এসেছিল ই-মেলে। খুঁটিয়ে পড়তেই চক্ষু চড়কগাছ মেদিনীপুর কালেক্টরেটের কর্মীদের। অবাক খোদ জেলাশাসকও। আবেদনকারী যে ‘একে-৪৭’ রাখতে চান!
‘একে-৪৭’ হল অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। এই অ্যাসল্ট রাইফেলটির জন্ম রাশিয়ায়। একটা সময় শুধুমাত্র সেনাবাহিনীতেই এর ব্যবহার সীমিত ছিল। এখন অবশ্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্যদের হাতেও এই আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। শীর্ষ মাওবাদী নেতা কিসেনজির পিঠে ঝোলানো একে-৪৭— দৃশ্যটা ভুলে যাননি এ রাজ্যের জঙ্গলমহলের মানুষজন।
সেই ‘একে-৪৭’ রাখতে চেয়েই সরাসরি পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনকে ই-মেল করেছেন এক ব্যক্তি। আবেদনপত্রে ওই ব্যক্তির কোনও ফোন নম্বর দেওয়া নেই। তবে যে মেল আইডি থেকে আবেদনটি এসেছে, তার সূত্র ধরে অনুমান, আবেদনকারীর নাম সম্ভবত মৌসিম পাহান। আর তাঁর বাড়ি সম্ভবত খড়্গপুর গ্রামীণের কোনও এলাকায়।
সেই সঙ্গে তাঁর স্বীকারোক্তি, এক সময়ে তাঁর আচরণ অসামাজিক ছিল। পরিচিতেরাই তাঁকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলেন। এখন পুরো বদলে গিয়েছেন।
অন্য জেলার মতো পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সদরেও ‘আর্মস সেকশন’ রয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের নতুন লাইসেন্স পেতে কিংবা পুরনো লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণের আবেদন এখানেই করতে হয়। তবে ওই ব্যক্তি সটান জেলা প্রশাসনের মেল আইডি-তেই ই-মেল পাঠিয়েছেন। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য অনেকেই নিজের কাছে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক রাখেন। এই জেলাতেও বেশ কয়েক জনের কাছে এমন বন্দুক রয়েছে। অতীতে কেউ কেউ শখ করেও লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক রাখতেন। পিস্তল কিংবা রিভলবার রাখতে চেয়ে আবেদন মাঝে মধ্যে এখনও আসে। তবে ‘একে-৪৭’ রাখতে চেয়ে এমন আবেদন হতবাক করেছে সংশ্লিষ্ট সকলকেই।
মেদিনীপুর কালেক্টরেটের এক প্রবীণ কর্মী বলছিলেন, ‘‘আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পরে কেউ একনলা বন্দুক, কেউ দো-নলা বন্দুক কিনেছেন
বলে শুনেছি। সে অনেক আগের কথা। তবে একে-৪৭ চেয়ে কেউ আবেদন করেছেন বলে
কখনও শুনিনি।’’
এ বার কী করণীয়? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের সহাস্য জবাব, ‘‘এ ভাবে কি কাউকে একে-৪৭ দেওয়া যায়?’’ আবেদনপত্রে অবশ্য জেলাশাসক রশ্মি কমলের প্রতি ওই ব্যক্তির অনুরোধ, ‘প্লিজ ম্যাম, একটু ভেবে দেখবেন!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy