মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেশের নেতা হওয়া যায় না বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আরও বক্তব্য, সবাইকে নিয়ে চলতে না পারলে নিজেকে ভারতীয় বলা যায় না।
বুধবার ময়দানে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর সার্ধশতবর্ষ পূর্তির সরকারি অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা মারামারি করেন, বিদ্বেষ ছড়ান, রক্তের রাজনীতি করেন, তাঁরা দেশের নেতা হতে পারেন না।’’ সরাসরি কারও নাম তিনি করেননি। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে মমতার এই বক্তব্যের মূল লক্ষ্য কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। মঙ্গলবার কলকাতায় অমিত শাহের এনআরসি-ভাষণের পরেও কারও নাম না করে মমতা বলেছিলেন, ‘‘এখানে পুজো দেখতে, আনন্দ করতে এসো। কিন্তু বিদ্বেষ ছড়াতে বা ঐক্য ভাঙতে এসো না।’’ ঘটনা পরম্পরা দেখে যাকে শাহের প্রতি বার্তা বলেই মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল।
গাঁধী জয়ন্তীর বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রশ্ন তোলেন দেশের নেতা কেমন হবেন? তার পর বলেন, ‘‘সবাই দেশনেতা হতে পারেন না। যিনি সমাজের সব জাত, ধর্ম, বর্ণের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পারেন। গাঁধী, নেতাজিই আমাদের দেশনেতা হতে পারেন।’’ গাঁধীর জীবন-আদর্শের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘তাঁর অহিংসা, শান্তি ও মৈত্রীর বাণী নিয়ে আমরা পথ চলব। তাঁর উপদেশ মেনেই আমরা চলব। অন্য কারও উপদেশ প্রয়োজন নেই।’’
পরে নিউ আলিপুরের এক পুজো মণ্ডপে গিয়ে মমতা ফের মনে করিয়ে দেন সব ধর্ম-বর্ণের মেলবন্ধনের কথা। তিনি বলেন, ‘‘আসল ধর্ম হল মনুষ্যত্ব, মানবিকতা। যা সবাইকে মিলিত করে। নিজেকে ভারতীয় বলব কিন্তু সবাইকে নিয়ে চলব না, সেটা হয়? তা হলে নিজেকে হিন্দুস্তানি বলব কী ভাবে?’’ এ রাজ্যের সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত দিয়ে মমতার কথায়, ‘‘এখানে সব পুজোই করি আমরা। ছটপুজো, কালীপুজো, নবরাত্রি, বড়দিন সবই পালন করি।’’
সকলে একসঙ্গে থাকার নজির হিসেবে এ দিন গাঁধী জয়ন্তীর সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। তিনিও বলেন, ‘‘যে গাঁধীজির প্রতি সারা পৃথিবী শ্রদ্ধাশীল, আমাদের দেশে কেউ কেউ মন্দির তৈরি করে তাঁর হত্যাকারীর পুজো করছেন। এ আমাদের লজ্জা। সঙ্কটের সময় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলতে হবে।’’
গাঁধী জয়ন্তী উপলক্ষে এ দিন রাজ্যে স্বচ্ছতা অভিযান করে বিজেপি। প্লাস্টিক বর্জনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের কথা ঘোষণা আগেই করেছিল কেন্দ্রীয় বিজেপি। প্রতিটি বিধানসভায় গাঁধীর বাণী নিয়ে পদযাত্রার কথা বলা হয়েছিল। রাজ্যে এ দিন তার প্রস্তুতিও শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy