পুরস্কার নিতে আগামী মার্চে বার্লিন যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জগৎসভায় আবারও বাংলার মাথায় সেরার শিরোপা। সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থান পেয়েছে রাজ্য। সেই স্বীকৃতির পুরস্কার নিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বার্লিনে যেতে পারেন। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে এক কর্মসূচিতে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পটি বিশ্বের দরবারে সেরার সম্মান পেয়েছিল।
নেতাজি ইন্ডোরে প্রায় ১১ হাজার জন তরুণ-তরুণীর হাতে সোমবার চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন মমতা। রাজ্য সরকারের ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে যাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, তাঁদের হাতেই এই নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেন বিশ্বের দরবারে বাংলার একের পর এক স্বীকৃতি প্রাপ্তির কথা। মমতার কথায়, ‘‘গর্ব করে বলতে চাই, যখন আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তখন স্বপ্ন দেখেছিলাম, বাংলা বিশ্বসেরা হবে। বাংলার ছেলেমেয়েরা সারা বিশ্ব জয় করবে। আমার জীবনের স্বপ্ন ছিল এটা।’’
সেই স্বপ্নই যে ক্রমে পূর্ণ হচ্ছে, সোমবার সে কথাই জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কন্যাশ্রীর জন্য বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছি। আমাদের দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে। তিন দিন আগে আবার একটা স্বীকৃতি পেয়েছি আমরা। বাংলা সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে বিশ্বে প্রথম হয়েছে।’’ সে জন্য পুরস্কার প্রাপ্তিও হবে। মু্খ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সেই স্বীকৃতি নিতে যাবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী বছর ২৩ মার্চ বার্লিনে পুরস্কার দেওয়া হবে। সুযোগ পেলে নিতে যাব। গর্ব করার ব্যাপার থাকলে আমি অবশ্যই যাই। তা ছাড়া যাই না।’’
২০১৭ সালে ‘কন্যাশ্রী’ সেরার সেরা শিরোপা পেয়েছিল। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ওই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ৬২টি দেশের ৫৫২টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল সে বার। ‘কন্যাশ্রী’ সবাইকে পিছনে ফেলে দেয়। মুখ্যমন্ত্রী সে বার পুরস্কার নিয়ে বলেছিলেন, ‘‘যে ৪০ লক্ষ কন্যা এই প্রকল্পের সুবিধা পায়, এই পুরস্কার তাদেরই উৎসর্গ করলাম।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল টমাস গ্যাশ তাঁর বক্তৃতায় মমতা এবং নাবালিকা বিয়ে রুখতে কন্যাশ্রীর কথা উল্লেখ করেছিলেন। ওই সম্মেলনের শেষে সঞ্চালক ঘোষণা করেছিলেন জন পরিষেবায় অভিনবত্বের জন্য কন্যাশ্রী প্রথম পুরস্কার পাচ্ছে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিদেশ সফরের ইচ্ছা নিয়ে তার দল তৃণমূল যদিও কিছুটা সংশয়ে। তাদের সংশয়ের কারণ কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিদেশ মন্ত্রক। কারণ, এর আগে মমতার বিদেশ সফর নিয়ে একাধিক বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অক্টোবরে মমতার রোম যাত্রায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিদেশ মন্ত্রকের বিরুদ্ধে। বিশ্ব শান্তি নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠনের আমন্ত্রণে রোমে যাওয়ার কথা ছিল মু্খ্যমন্ত্রীর। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন পোপ এবং জার্মানির তৎকালীন চ্যান্সেলর অ্যা়ঞ্জেলা মরকেল। বিদেশ মন্ত্রক মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল, তারা ছাড়পত্র দিতে পারছে না। যদিও কোনও কারণ দেখানো ছিল না চিঠিতে। তা নিয়ে ক্ষুণ্ণ হন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়া মমতার শিকাগো এবং চিন সফরও শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায়। সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিল মমতার দল তৃণমূল। সোমবার দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে কেন্দ্রীয় সরকার সবাইকে যেতে দেয়, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকে দেয়। কিন্তু উনি তো এখন শুধু বাংলার মুখ নন, গোটা দেশের মুখ হয়ে উঠেছেন। কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে অনেক প্রকল্পই এখন বিশ্ববন্দিত। তাই অবশ্যই তাঁকে যেতে দেওয়া উচিত। তবে কেন্দ্র কী করবে, তা ওরাই জানে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy