মুখ্যমন্ত্রীর সভার আগে হেলিকপ্টার নামার মহড়া। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বছরের গোড়ার দিকে সন্দেশখালির প্রতিবাদ-আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন আন্দোলনকারীরা বার বার চেয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বার সেখানে আসুন। বছর শেষে আজ, সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ঋষি অরবিন্দ মিশনের মাঠে প্রশাসনিক সভা ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মোড়া হয়েছে দ্বীপাঞ্চল এবং আশপাশের এলাকা। সন্দেশখালি জুড়ে বসেছে মমতার ‘কাটআউট’। আন্দোলনকারীদের একাংশ এবং বিরোধীদের দাবি, আগেই এলাকায় আসা উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তৃণমূল পাল্টা বলছে, প্রতিশ্রুতি রাখতে সন্দেশখালি যাচ্ছেন দলনেত্রী।
বসিরহাটে পুলিশ-জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য সাধারণ পুলিশকর্মী এবং অফিসার মিলিয়ে প্রায় ৭০০ জন নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবেন। জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পরিষেবা প্রদান করা ছাড়াও, সন্দেশখালি-সহ বসিরহাট মহকুমায় বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে যাবেন। সভাস্থলের কাছেই তৈরি হয়েছে হেলিপ্যাড। রবিবার সেখানে হেলিকপ্টার নামার মহড়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা সভাস্থল ও লাগোয়া এলাকা পরিদর্শন করেন। যান পুলিশ সুপার, জেলাশাসক, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোও। মঞ্চের কাছে জড়ো করা হয়েছে সাইকেল-সহ নানা সামগ্রী।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রায় ৭০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। ধামাখালি, তুষখালি, সন্দেশখালি, ভোলাখালি, খুলনা-সহ প্রতিটি জেটিঘাটে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই জেটিঘাট দিয়ে প্রচুর মানুষ নদী পেরিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে আসবেন। এ জন্য বাইরে থেকেও আনা হয়েছে প্রচুর নৌকা এবং মাঝি। জলপথে নজরদারি চলবে। রাজ্য পুলিশের একাধিক লঞ্চ ও ‘রিকভারি বোট’ আনা হয়েছে সন্দেশখালি ও ধামাখালি জেটিঘাটে।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম সন্দেশখালির নমিতা সাঁপুই বলেন, ‘‘দেরিতে আসছেন। ভবিষ্যতে শান্ত সন্দেশখালি চাইছি আমরা।’’ পরান সর্দার নামে আর এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যেন দেখেন, আগামীতে আমরা দুষ্কৃতীদের হটিয়ে ভাল ভাবে থাকতে পারি।’’
বিরোধীরা মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর আগেই সন্দেশখালি যাওয়া উচিত ছিল। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু’টি নির্বাচনে (বসিরহাট লোকসভা এবং হাড়োয়া বিধানসভার উপ-নির্বাচন) তৃণমূল জয়ী না হলে উনি যেতেন না।’’ লোকসভা ভোটে সন্দেশখালি বিধানসভা আসনে বিজেপি এগিয়েছিল। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘‘আগেই গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মানুষের সমস্যার কথা শোনা উচিত ছিল। বিধানসভা ভোটের আগে ক্ষতে প্রলেপ দিতে যাচ্ছেন।’’ আন্দোলন-পর্বে না গেলেও লোকসভা ভোটের প্রচারে বসিরহাটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, সে কেন্দ্র (সন্দেশখালি বসিরহাট লোকসভার অধীন) থেকে তৃণমূল জিতলে, তিনি সন্দেশখালি যাবেন। সে কথা মনে করিয়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন। তিনি আসছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy