পরীক্ষা নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রস্তাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন বলে খবর। —ফাইল চিত্র।
বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল সিমেস্টারের পরীক্ষা ক্যাম্পাসে সশরীরে না-এসে বাইরে থেকেই দেওয়া উচিত—শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের বৈঠকে এমন প্রস্তাবই আলোচিত হল। তবে এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন বলে খবর।
উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে সল্টলেকে বৈঠক শেষে শনিবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যা আলোচনা হয়েছে, তা অনুমোদনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধিকার রয়েছে। যা আলোচনা হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব যাওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া হবে।’’ মন্ত্রী জানান, পড়ুয়াদের অনেকেই চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। তাই ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরীক্ষার প্রক্রিয়া শেষ করতেই হবে।
তবে ক্যাম্পাসে না-এসে কী ভাবে পড়ুয়ারা পরীক্ষা দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই বলছেন, বহু পড়ুয়ার বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ বা কম্পিউটার নেই। সে ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে প্রথাগত প্রশ্নোত্তরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যাবে না। একটি সূত্রের দাবি, বিকল্প হিসাবে হোম অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রজেক্ট করানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রজেক্ট বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হবে বা পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের বিভাগে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জমা দিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘কোভিডে মৃত্যুর সম্পর্ক নেই’, দাহ বিতর্কে ভুয়ো তথ্যকে দুষল রাজ্য
আরও পড়ুন: 'ভুল পথে হাঁটছি', ট্রাম্পকে বার্তা মার্কিন করোনা টিমের প্রধানের
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কলা বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রেসিডেন্সির সব বিভাগেই চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষায় ক্যাম্পাসে না-এসে মূল্যায়ন এবং আগের সিমেস্টারের ফলের ভিত্তিতে পাশ করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া, যাদবপুর ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাঁদের হোম অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে, দরকারে কর্তৃপক্ষ তাঁদের বাড়ি থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবেন।
লকডাউন শেষে রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অন্তত এক মাস পরে চূড়ান্ত সিমেস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এ দিনের বৈঠকে সব উপাচার্য ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে চূড়ান্ত সিমেস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা হওয়ার পক্ষে মত দেন। সূত্রের খবর, চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার্থীদের আগের সিমেস্টার থেকে ৫০% নম্বর, বাকিটা অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন, হোম অ্যাসাইনমেন্ট অথবা প্রজেক্টের মাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে।
সূত্রের খবর, অন্য সিমেস্টারের পরীক্ষা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই নেওয়া হবে বলেও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় তিন জন উপাচার্য জানুয়ারিতে অ্যাকাডেমিক সেশন চালুর কথা বলেন। এক জন উপাচার্যের পরামর্শ ছিল, নভেম্বর থেকে চালু হোক শিক্ষাবর্ষ। পরে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘শিক্ষাবর্ষ এখনই শুরু করা যাবে না। কবে থেকে শুরু করা যাবে, সে সিদ্ধান্ত আমরা পরে নেব। অন্যান্য রাজ্য কী করছে, তা-ও দেখা হবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানান, অন্য সিমেস্টারের পড়ুয়ারা এক ধাপ করে এগিয়ে যাবে। পরে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেই মতো উপাচার্যেরা ‘মোডালিটিজ়’ তৈরি করবেন।
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানান, সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এখনও ছাত্রদের সঙ্গে কথাই বলেনি। কিন্তু ছাত্রদের বহু প্রশ্ন রয়েছে। এগুলি নিয়ে এসএফআই ১৭ জুন প্রতিবাদ জানাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy