মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মিড-ডে মিলের মেনুতে বৈচিত্র নয়, বাচ্চাদের পেট ভরে ডাল-ভাত-তরকারি খাওয়ানোয় জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার পূর্ব বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘সাত দিনে সাত রকমের মেনু! যা বরাদ্দ, তাতে এ সব আসবে কী করে? আমি চাই, (বাচ্চারা) ডাল-ভাত-তরকারিটা পেট ভরে খাক।’’ তাঁর এই মন্তব্যের পরে, বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের ঘোষিত ‘মেনু’র ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
প্রশাসন সূত্রের দাবি, পূর্ব মেদিনীপুর ও বীরভূমের এক অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং হুগলির জেলাশাসক ‘মিল’-এর জন্য যে ‘মেনু’ তৈরি করেছেন, তা নিয়ে ধন্দ ছিল সংশ্লিষ্ট অনেকের। তালিকা অনুযায়ী, সপ্তাহে দু’দিন ডিমের তরকারি, এক দিন ‘পোস্ত-কারি’, দু’দিন চাটনি, সয়াবিন, ডাল আর তরকারি দিতে বলা হয়। হুগলির তালিকায় সপ্তাহে এক দিন মুরগির মাংস এবং পূর্ব মেদিনীপুরের তালিকায় ডিমের বদলে মাছের ঝোলের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা দাবি তোলেন, ওই তালিকা চালাতে হলে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য যেখানে মাথাপিছু বরাদ্দ চার টাকা ৪৮ পয়সা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বরাদ্দ ছ’টাকা ৭১ পয়সা, সেখানে এই মেনু বাস্তবসম্মত নয় বলে জানিয়ে দেন বিকাশ ভবনের এক কর্তা। তাঁর সংযোজন ছিল: ‘‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় ভাবে এমন নির্দেশ দেয়নি।’’
সে সূত্র টেনেই কার্যত মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘বিভ্রান্তি হচ্ছে। তোমরা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিও। চার টাকায় তো ডাল-ভাতই হয় না। একটা ডিমের দামই প্রায় ছ’টাকা। তা-ও চালটা প্রায় বিনা পয়সায় দিচ্ছি। এলাকায় কোনটা সস্তায় পাওয়া যাবে দেখে নিয়ে (বাচ্চারা) পেট ভরে ডাল-ভাত-তরকারিটা খাক।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের স্কুলগুলিতে পাঠানো নির্দেশিকা।
রাজ্যের খাদ্য সচিব মনোজকুমার আগরওয়াল বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এ রকম নির্দেশিকা বেরিয়েছিল। জেলাশাসককে আমরা বলে দিয়েছি।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের তালিকার বিষয়ে মন্তব্য করব না। সরকারের নির্দেশিকা মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ বীরভূমে নতুন ‘মেনু’ চালু করার নির্দেশিকা বেরিয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। কিন্তু সমালোচনা হওয়ায় কড়াকড়ি করেনি প্রশাসন। আজ, মঙ্গলবার সেখানে মিড-ডে মিল নিয়ে ফের বৈঠক ডেকেছেন কর্তারা। হুগলির জেলাশাসক রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘আমরা মেনুতে আমিষ, নিরামিষ দু’টো বিকল্পই রেখেছি। যে স্কুল, যা পারবে, তা-ই খাওয়াবে।’’ বস্তুত, সোমবারই স্কুল শিক্ষা দফতর এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, মিড ডে মিলের সাপ্তাহিক মেনু নির্দিষ্ট করে দিয়ে রাজ্য থেকে কোনও নির্দেশ
জারি করা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জোর দিয়েছেন, মিড-ডে মিলের বরাদ্দ ঠিক মতো খরচ হচ্ছে কি না তা দেখার উপরে। জেলা থেকে মিড-ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কোন স্কুলে, কী খাওয়ানো হচ্ছে তা রাজ্য স্তরে নিয়মিত ‘এসএমএস’ করে জানাতে বলেছেন। প্রস্তাব দিয়েছেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর যে সদস্যেরা ‘মিল’ রান্না করেন, তাঁদের মধ্যে পালা করে দু’জনকে ‘কমিউনিটি কিচেন গার্ডেন’-এর দেখাশোনায় নিযুক্ত করে ১০০ দিনের প্রকল্পের আওতায় আনা যায় কি না, তা দেখতে। সে বাবদ বাড়তি আয় দলের সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy