ফাইল চিত্র।
আলোচনা হচ্ছিল স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড নিয়ে। সেখানেই কথা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতর বড় দফতর। কে কোথায় কী করে বেড়াচ্ছে, আর লোক ঢুকিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক কিছুই হচ্ছে।’’ রায়গঞ্জে দুই দিনাজপুরকে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে তাঁর মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) বিভিন্ন স্তরে নিয়োগ নিয়ে যে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে, ঘুরিয়ে সেই প্রসঙ্গেই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী?
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে অনিয়মের যে ইঙ্গিত রয়েছে সে সম্পর্কে তাঁর আমলের দায় এড়িয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথায় অবশ্যই সারবত্তা আছে। জেলায় অতীতে যদি কিছু হয়ে থাকে তবে আমরা যথাবিহিত ব্যবস্থা নেব।’’ আর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কোন প্রেক্ষিতে এ কথা বলেছেন, তা না জেনে কিছু বলতে পারব না। তবে শিক্ষা দফতর নিশ্চিত ভাবে বড় দফতর। সমস্ত খুঁটিনাটি সবসময় সকলের নজরে আসে না।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ‘লোক ঢোকানো’ সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আদালতে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) এত তিরস্কারের মুখে পড়তে হচ্ছে যে, এসএসসি-র চেয়ারম্যানের এখন উচিত চেয়ার নিয়ে কোর্টে গিয়ে বসে থাকা!’’
প্রাক্তন ও বর্তমান দুই শিক্ষামন্ত্রীকে কটাক্ষ করে সুজন বলেন, ‘‘আগে ব্রাত্য বসু বলেছেন, দায় তাঁর নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন, দায় তাঁর নয়। এখন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কে কী করেছে, বোঝা যাচ্ছে না! এই কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী কি দায় ঝেড়ে ফেলতে পারেন? এই সার্বিক দুর্দশার দায় তো তাঁকে নিতে হবে।’’
এসএসসি-র উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম থেকে দ্বাদশের নিয়োগের অস্বচ্ছতার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক তো চলছিলই। সেই সঙ্গে স্কুলে গ্রুপ-ডি ও গ্রুপ-সি কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিতর্কও যোগ হয়েছে। ২০১৯ সালে গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও প্রচুর নিয়োগ হয়েছে। এই অভিযোগে প্রথমে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। প্রথমে এই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল কমিশনের বিরুদ্ধে। তবে কমিশন আদালতকে জানায়, ওই নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও সুপারিশ তারা করেনি। এ নিয়ে তারা একটি হলফনামাও জমা দেয়। এর পরে প্রশ্ন ওঠে, এসএসসি সুপারিশ না করলে, ওই নিয়োগ হল কী ভাবে? তখন জড়িয়ে পড়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নাম। পর্ষদের আইনজীবী দাবি করেন, কমিশনের সুপারিশ মেনেই হয়েছে যাবতীয় নিয়োগ। পর্ষদ নিজে থেকে কোনও নিয়োগ করেনি।
মামলাকারীরা হাই কোর্টে জানিয়েছিলেন, গ্রুপ-ডি ও গ্রুপ-সি পদে যথাক্রমে ৫৪২ ও প্রায় ৩৫০ জনকে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ করা হয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৫৪২ জনের
বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন। গ্রুপ-ডি নিয়োগে অনিয়ম হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল গঠনের নির্দেশও দিয়েছে হাই কোর্ট। এই দলকে দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy