Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

State Budget 2021-22: আবাসন শিল্পের আবেদনে সাড়া মমতার, কমল স্ট্যাম্প ডিউটি

রাজ্য এবং শিল্পমহল, দু’পক্ষেরই আশা, এর ফলে জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা অফিসের জন্য বাণিজ্যিক জায়গা কেনা বা ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে লেনদেন খরচ কমবে।

বাজেট বক্তৃতার নথি হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাজেট বক্তৃতার নথি হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২১ ০৫:৪১
Share: Save:

করোনা-কালে ফ্ল্যাট-বাড়ির বিক্রি মুখ থুবড়ে পড়ার পরে মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য স্ট্যাম্প ডিউটি-তে ছাড় দিয়ে আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছিল। তাই দেখে সেই পথে হাঁটার আর্জি জানায় এ রাজ্যের নির্মাণ সংস্থাগুলিও। বুধবার রাজ্য বাজেটে তাতেই সাড়া দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। স্ট্যাম্প ডিউটি কমাল ২ শতাংশ বিন্দু। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের বহু এলাকায় জমি কিংবা আবাসনের সরকার নির্ধারিত দাম (সার্কল রেট) সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাজারদরের তুলনায় বেশি হওয়াতেও ব্যবসা ধাক্কা খায় বলে নালিশ ছিল এই শিল্পের। দীর্ঘ দিন ধরে সেই সার্কল রেট ছাঁটার জন্য দরবার করছিল তারা। এ দিন সেই দাবিও মেনে নিয়েছে রাজ্য। ওই দাম ১০% হারে কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। তবে দুই সুবিধাই মিলবে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করলে।

রাজ্য এবং শিল্পমহল, দু’পক্ষেরই আশা, এর ফলে জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা অফিসের জন্য বাণিজ্যিক জায়গা কেনা বা ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে লেনদেন খরচ কমবে। ফলে আর্থিক বোঝাও কমবে ক্রেতার। আর এই টানেই সেগুলি কেনার আগ্রহ বাড়বে। সেই চাহিদার হাত ধরে চাঙ্গা হওয়ার পথ পাবে আবাসন সংস্থাগুলি। পড়ে থাকা জমি-বাড়ি বিক্রি হবে। বিক্রিবাটা বাড়লে কর খাতে আয় বাড়বে রাজ্যেরও।

গত বছর করোনার ধাক্কায় এই রাজ্য-সহ গোটা দেশেই জমে ওঠে অবিক্রীত ফ্ল্যাট-বাড়ি, জমি, অফিসের জন্য বরাদ্দ জায়গা। তাই লকডাউন শিথিল হতে না-হতেই কিছু রাজ্য স্ট্যাম্প ডিউটি কমায়। তাতে বিক্রি বাড়ার পরে আবাসন ক্ষেত্রের সংগঠন ক্রেডাই, উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক পশ্চিমবঙ্গে সেই ছাড়ের আর্জি জানায়।

বুধবার বাজেট পড়তে গিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং নির্মাণ সংস্থাগুলির ক্ষতির কথা বলেই জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি ইত্যাদি কেনাবেচা বা লিজ়ের ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটি ২ শতাংশ বিন্দু এবং সার্কল রেট ১০% হারে কমানোর প্রস্তাব দেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, এখন শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় স্ট্যাম্প ডিউটির হার যথাক্রমে ৬% ও ৫%। তা ২ শতাংশ বিন্দু কমলে এই ক্ষেত্রে চাহিদা বাড়বে বলে তাঁদের আশা।

ক্রেডাইয়ের জাতীয় প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন পতোদিয়া এবং রাজ্যের প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতা, নাইট ফ্র্যাঙ্কের কলকাতা শাখার প্রধান স্বপন দত্ত, বেঙ্গল পিয়ারলেস হাউসিং ডেভেলপমেন্টের সিইও কেতন সেনগুপ্ত, সকলেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। খুশি সৃষ্টি ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ইডেন রিয়্যাল্টি, সিদ্ধা, জৈন গোষ্ঠীর মতো নির্মাণ সংস্থাও। হর্ষবর্ধন, সুশীল ও কেতনের আশা, আর্থিক সমস্যার জন্য যাঁরা সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রেখেছিলেন, তাঁরা এই চার মাসে কম খরচে তা সারতে পারবেন।

শিল্পের দাবি, স্ট্যাম্প ডিউটির সঙ্গে সার্কল রেট-ও কমায় আবাসনে চাহিদা বাড়বে। তাঁদের বক্তব্য, কোনও সম্পত্তির বাজারদরের থেকে সার্কল রেট বেশি হলে, সেটি বেচা কঠিন হত। তখন আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কর এবং ফি-র খরচের হিসেবও বেশি হত সার্কল রেট মেনে। বাজেট প্রস্তাবে সেই সমস্যা মিটবে। ফলে লেনদেনের খরচ কমায় ক্রেতারা উৎসাহী হবেন। পড়ে থাকা সম্পত্তি বিক্রির পথ খুলবে। নতুন প্রকল্পে ঢালার পুঁজি পাবে নির্মাতা সংস্থা। স্বপনবাবুর মতে, আবাসন ক্ষেত্র চাঙ্গা হবে এতে। তবে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড স্তিমিত হওয়ায় মূলত ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদাই বাড়বে।

যদিও প্রশ্ন, চার মাসের জন্য এই সুযোগ কি যথেষ্ট? শিল্পের আশা, কিছুটা উপকার তো হবেই। সুফল মিললে হয়তো সময়সীমাও বাড়বে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE