মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ভূপতিনগরে এনআইএ-র উপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করলেন, বিজেপিকে ভোটে জেতাতেই এনআইএ-র এই তৎপরতা। মমতা বলেন, ‘‘গ্রামবাংলায় মাঝরাতে অপরিচিত কাউকে দেখলে গ্রামবাসীরা যা করে থাকেন, তা-ই হয়েছে।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মাঝরাতে কেন অভিযান চালাতে হল এনআইএ-কে?’’ অভিযানের কথা পুলিশকে এনআইএ জানিয়েছিল কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা।
২০২২ সালে ভূপতিনগরে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে মৃত্যু হয় তিন জনের। পরে আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার যায় এনআইএ-র হাতে। সেই ঘটনায় সম্প্রতি সক্রিয় হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। ভূপতিনগরের বাসিন্দা কয়েক জনকে তলব করা হয়। এ নিয়ে আপত্তি জানায় তৃণমূল। রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, বিজেপি নেতারা এনআইএ-র পদাধিকারীর সঙ্গে দেখা করে নামের তালিকা তুলে দিয়েছেন। সেই তালিকা মিলিয়ে তৃণমূলের নেতা, কর্মী, সংগঠকদের ডেকে পাঠিয়ে ভোটে নিষ্ক্রিয় থাকার কথা বলছে এনআইএ। কুণালের অভিযোগ ছিল, বিজেপি ভোটে জিততে এনআইএ-কে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। ভূপতিনগরের ঘটনার পর কার্যত একই অভিযোগ উঠে এল মুখ্যমন্ত্রীর গলাতেও। প্রসঙ্গত, ইদানীং নির্বাচনী প্রচারসভার মঞ্চ থেকেও একই অভিযোগ করে আসছেন মমতা।
শনিবার সকালে রায়গঞ্জে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন ওরা মাঝরাতে অভিযানে গেল? পুলিশের অনুমতি নিয়েছিল এনআইএ? মধ্যরাতে গ্রামে অচেনা কাউকে দেখলে গ্রামবাসীরা যে আচরণ করেন, এনআইএ-র লোকজনকে দেখেও গ্রামবাসীরা তা-ই করেছেন। ভোটের মুখে কেন ওরা লোকজনকে গ্রেফতার করছে? বিজেপি কী ভেবেছে, ওরা সব বুথ এজেন্টদের গ্রেফতার করে নেবে? এনআইএ-র কী অধিকার আছে? ওরা বিজেপিকে সমর্থন জোগাতেই এমনটা করছে। আমরা গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে বিজেপির এই নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আবেদন করছি।’’
সূত্রের খবর, গ্রামে অভিযানে যাওয়ার কথা জানিয়ে স্থানীয় থানার কাছে বাহিনী চেয়েছিল এনআইএ। কিন্তু পুলিশ সূত্রে খবর, বাহিনী দেওয়ার আগেই অভিযানে নেমে পড়ে এনআইএ। যদিও এনআইএ-র সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল। হামলার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ঘটনা নিয়ে লিখিত ভাবে থানায় অভিযোগ জানিয়েছে এনআইএ। অন্য দিকে, বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানা নামে যে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গাড়িতে তুলেছিল এনআইএ, তাঁদের দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে এনআইএ। ধৃতেরা তৃণমূল কর্মী বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
এরই মধ্যে তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে এনআইএ। গাড়ি ভাঙচুর হয়। দুই এনআইএ আধিকারিক সামান্য আহত হয়েছেন বলেও খবর। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তৃণমূল নেতার অনুগামীদের হামলার মুখে পড়েছিল ইডি। কার্যত প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। সেই ঘটনার পর তোলপাড় হয় গোটা রাজ্য। তার রেশ কাটার আগেই ভোটমুখী বাংলায় এ বার আক্রান্ত এনআইএ। যে ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy