প্রতীকী ছবি।
স্কুলের পোশাক বিলি তো আছেই। বিতরণ করা হয়েছে সাইকেলও। করোনাবেলায় দেওয়া হয়েছে ট্যাব। এ বার পড়ুয়া-সহ সকলে পাবেন চশমা। রাজ্য সরকারের এই নতুন কল্যাণ প্রকল্পের নাম ‘চোখের আলোয়’। এটি আপাতত চালু থাকবে পাঁচ বছর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে ঘোষণা করেন, নবীন থেকে প্রবীণ, নবজাতক থেকে বৃদ্ধ— সকলেরই চোখের চিকিৎসা করাবে রাজ্য সরকার। ২০২৫ সাল পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে চলবে ‘চোখের আলোয়’ কর্মসূচি। ‘‘আমাদের লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রত্যেকের চোখের সুস্থতা। সকলের জন্য চক্ষু-স্বাস্থ্য। এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ। কাল (মঙ্গলবার) থেকেই ১২০০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং শহরের ১২০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই প্রকল্প চালু হবে। পরে সব গ্রাম পঞ্চায়েত এবং শহরকে আনা হবে এর আওতায়,’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কর্মসূচির লোগো ও নামকরণ করেছেন তিনিই।
সরকারি হিসেবে, এই কর্মসূচিতে গোটা রাজ্যের অন্তত ২০ লক্ষ বয়স্ক মানুষের চোখের পরীক্ষা করবেন চক্ষু বিশেষজ্ঞেরা। ছানি অপারেশন করা হবে নিখরচায়। দরকারে বিনামূল্যে তাঁদের চশমাও বানিয়ে দেবে সরকার। প্রশাসনের ধারণা, অন্তত ৮,২৫,০০০ মানুষকে চশমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি, সব সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও চোখ পরীক্ষা করাবে সরকার। প্রয়োজনে সেখানেও চশমা দেওয়া হবে বিনামূল্যে। এ ক্ষেত্রে প্রায় চার লক্ষ চশমা দিতে হতে পারে সরকারকে। যে-সব শিশু
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে যায়, সরকার তাদেরও চোখ পরীক্ষা করাবে। এই বিপুল কর্মকাণ্ডে তিনশোর বেশি চক্ষুশল্য চিকিৎসক এবং অন্তত ৪০০ জন চক্ষু বিশেষজ্ঞকে যুক্ত করছে প্রশাসন।
এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ট্রমা কেয়ার কেন্দ্র চালু করেছে রাজ্য। এর আগে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার কেন্দ্র গড়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ট্রমা কেয়ার কেন্দ্রে ২০টি শয্যা ছাড়াও থাকবে দু’টি অপারেশন কক্ষ। ১০টি শয্যা থাকবে রিকভারি কক্ষে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর-সহ গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষ এই পরিকাঠামোর সুবিধা পাবেন। দুর্ঘটনা ঘটলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের থেকে চিকিৎসাও পাওয়া যাবে। তার জন্য কলকাতা ছুটে আসতে হবে না।
এর আগে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পোশাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। পড়ুয়াদের সাইকেল দেওয়ার জন্য সবুজসাথী প্রকল্প অনেক দিন আগেই চালু করেছে রাজ্য। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ পড়ুয়া উপভোক্তাকে সাইকেল দিয়েছে সরকার। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সেই সংখ্যা কোটিতে পৌঁছে যাবে। কিছু দিন আগেই সরকার ঘোষণা করেছে, রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণিতে পঠনরত প্রায় সাড়ে ন’লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। এ বার ‘চোখের আলোয়’ কর্মসূচিতে শিশু থেকে প্রবীণ পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক উপভোক্তাকে চোখের চিকিৎসার পরিষেবা দিতে চায় সরকার।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিরোধী শিবিরের ধুন্ধুমার তৎপরতার মুখে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা ভোটের আগে এ ভাবে ফের বঙ্গবাসীর মন জয় করতে চাইছেন। এর আগে চালু করা দুয়ারে সরকার, পাড়ায় সমাধানের সঙ্গে সঙ্গেই চলবে ‘চোখের আলোয়’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy