Advertisement
E-Paper

১৪ জেলার চোখে আলো পৌঁছয়নি, ক্ষুব্ধ নবান্ন

কোভিডের দাপট স্তিমিত হওয়ার পরে নিখরচায় ছানি অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সেই প্রকল্পের নামকরণ করেন ‘চোখের আলো’।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৩
Share
Save

জেলায় জেলায় মানুষের চোখে আলো দিতেই ‘চোখের আলো’ প্রকল্প। অথচ বাংলার অন্তত ১৪টি জেলায় অজস্র বাসিন্দার চোখে এখনও অন্ধকার জমাট বেঁধে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নবান্ন। এতটাই যে, সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে ওই সরকারি প্রকল্প সফল না-হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে যে-সব জেলায় ওই প্রকল্পের কাজ কার্যত অন্ধকারে, সেখানে আশাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বয়স্কদের চোখের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া এবং প্রকল্পের কথা তাঁদের জানানোর জন্য অতিরিক্ত ৩৫০ টাকা উত্‍সাহ ভাতাও দেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

কোভিডের দাপট স্তিমিত হওয়ার পরে নিখরচায় ছানি অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সেই প্রকল্পের নামকরণ করেন ‘চোখের আলো’। প্রকল্প সফল করতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চিকিৎসকদের অস্ত্রোপচারের নির্দিষ্ট সংখ্যাও বেঁধে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু নবান্নে তার রিপোর্ট পৌঁছনোর পরে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি জেলায় নির্দিষ্ট সেই লক্ষ্যের ধারেকাছেও পৌঁছনো যায়নি। তার কারণ সন্ধানে এ বার জেলায় যাচ্ছেন পর্যবেক্ষকেরা। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা জানান, লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ জেলাগুলির স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের তলব করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গ্রামীণ মানুষের অভিজ্ঞতাও শোনা হবে।নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, চোখের আলো সফল করতে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা ছিল: জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ছড়িয়ে থাকা প্রত্যেক সার্জন বা চক্ষু-শল্য চিকিৎসককে প্রতি মাসে অন্তত ৬০টি ছানি অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ১৪টি জেলায় তার পঞ্চাশ শতাংশ সাফল্যও মেলেনি। মালদহের উদাহরণ দিয়ে নবান্নের এক কর্তা জানান, ওই জেলায় সরকারি চক্ষু চিকিত্‍সা কেন্দ্র রয়েছে। রয়েছেন দু’জন সার্জনও। মাসে ৬০টি অস্ত্রোপচারের লক্ষ্যমাত্রা ধরলে দু’জন সার্জনের কমপক্ষে ১২০টি অস্ত্রোপচার করার কথা। তিন মাসে সেই লক্ষ্যমাত্রা হওয়ার কথা ৩৬০। কিন্তু ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে সেখানে অস্ত্রোপচার হয়েছে মাত্র ১০টি। পুরুলিয়ায় দুই সার্জনের হাতে তিন মাসে অস্ত্রোপচার হয়েছে ১৫ জনের। ব্যর্থতার এই তালিকায় রয়েছে আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলাও।

তবে উল্টো চিত্রও রয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। যেমন অভূতপূর্ব সাফল্য মিলেছে নদিয়া জেলায়। সেখানে একটি সরকারি চক্ষু চিকিত্‍সা কেন্দ্রে দু’জন সার্জন তিন মাসে ৩৯১ জনের ছানি অস্ত্রোপচার করেছেন।

প্রকল্প রূপায়ণে এমন পার্থক্যের কারণ হিসেবে স্বাস্থ্য দফতরের অনেকে অবশ্য সরকারি প্রচারকেই দায়ী করছেন। গাঁ-গঞ্জে এই প্রকল্পের প্রচার যে এখনও তেমন জোরদার নয়, প্রত্যন্ত জেলাগুলিতে সরেজমিনে ঘুরে তা বুঝতে পেরেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘শুধু স্বাস্থ্য দফতর নয়, এ ব্যাপারে জেলার তথ্য সংস্কৃতি দফতরেরও একটু উদ্যোগী হওয়া দরকার ছিল। ইতিবাচক ভুমিকা নিতে পারতেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের কর্মী, এমনকি শাসক দলের কর্মীরাও। মানুষের সঙ্গে তাঁদের নিবিড় যোগাযোগ থাকলে গ্রামীণ মানুষকে তাঁরাই তো প্রকল্পের কথা বলতে পারতেন!’’

Mamata Banerjee Chokher Alo Scheme

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}