Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

‘এগিয়ে চলো, সঙ্গে আছি’, ছাত্রদের বললেন মমতা

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত মিছিল করেন মমতা।

পথে পথে: সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজাবাজারে দেবস্মিতা ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

পথে পথে: সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত পদযাত্রা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজাবাজারে দেবস্মিতা ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

নিজে ছাত্র-যুব আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ বার ছাত্রদের ‘স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে’ ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রদের বলব কারও বাধা, চোখ-রাঙানি মানবে না। কারও পরোয়া করবে না। নিজের বিবেক যা বলবে, তাই করবে। তোমরা তোমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাও।’’

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত মিছিল করেন মমতা। মিছিলের শুরুতে রাজাবাজারে এবং শেষে মল্লিকবাজারে দুটি সভায় তিনি বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি জুলুমের ঘটনা ঘটেছে।’’ জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কানপুর আইআইটি বা মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পুলিশি অভিযানের নিন্দা করে মমতা বলেন, ‘‘১৮ বছর বয়স ভোটাধিকার প্রাপ্তির। ১৮ বছর বয়স এগিয়ে যাওয়ার। তা সত্ত্বেও কেন ১৮ পেরনো পড়ুয়াদের আন্দোলনের জন্য অন্যের অনুমতি নিতে হবে? ছাত্র-যুবদের উপর জুলুমবাজি কেন হবে? ছাত্র-যুব ও শিক্ষকদের আন্দোলনের পাশে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’’ কেউ ভয় দেখালেও ছাত্রদের অবিচল থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনও বার বার এই আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। প্রতিবাদ আন্দোলন ঘিরে বিজেপি অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারে বলেও এ দিন ফের রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। কোনও রকম প্ররোচনায় পা না দেওয়ার আবেদনও করেছেন।

এ রাজ্যে তিনি এনপিআর (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার) বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছেন, এ দিন তাঁর ব্যাখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আগে তো জানতামই না। জনগণনার জন্যে বাড়ি বাড়ি লোক গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। তাই বলেছিলাম। কিন্তু পরে জানা গেল, তা নয়। তাই আমরা এনপিআর বন্ধ করে দিয়েছি।’’ সরকারের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘‘কোনও ঠিক নেই। সকালে এক কথা বলে, দুপুরে এক কথা বলে, সন্ধ্যায় আর এক কথা বলে আর রাতে অন্য কথা। ‘চায়ের চর্চায়’ এক কথা আর গুলি চালানোর পরে আর এক কথা!’’

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নিহতদের পাশে মমতা

সিএএ এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে গত সপ্তাহ থেকে নাগাড়ে কলকাতার পথে মিছিল করছেন মমতা। এ দিনও ধামসা-মাদল, কাঁসর, শঙ্খের তালে তালে তাঁর মিছিল এগিয়েছে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে। বাংলার মানুষকে তাঁর উপরে ‘ভরসা’ রাখার আবেদন জানানোর পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘আপনাদের সাইনবোর্ড সরকার আছে। মানুষ নেই সঙ্গে। মনে রাখবেন, সরকার থাকা সত্ত্বেও জনতার ভরসা চলে গেলে আপনাদেরও চলে যেতে হবে। তাই গায়ের জোর দেখাবেন না।’’

আরও পড়ুন: মুখ খুলুন আমার হয়ে, ডাক ধনখড়ের

এই আন্দোলন-তপ্ত আবহে কেন্দ্রকে ভোট করার চ্যালেঞ্জ আগেই দিয়েছিলেন মমতা। এ দিনও একই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতা বলেন, ‘‘এই ইস্যুতে একটা ভোট করে দেখুন।’’

আরও পড়ুন: শাহের ইস্তফা চান সোমেন, মিছিল আজ

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য এ দিন মমতাকে পাল্টা বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের আইন মানি না। পুলিশের অনুমতিও চাই না। যখন যেখানে মনে করব, মিছিল করব। উনি পারলে আটকাবেন।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘নিজেদের ঢাক পেটানোর জন্য এ সব বলছেন। কিন্তু ঢাক পিটিয়ে লাভ নেই। ঢাক ফেঁসে গিয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy