প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল তাঁর। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে যে ‘স্থানীয় বিধায়ক’ (নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী) থাকবেন, তা তাঁকে আদৌ জানানো হয়নি। কলাইকুন্ডার বৈঠক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মোদীকে লেখা চিঠিতে এমনই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সরকারি সেই চিঠিতে তিনি শুভেন্দুর নাম লেখেননি। কিন্তু মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে না-ছাড়ার বিষয়ে মোদীকে লেখা পাঁচ পাতার চিঠিতে যে ১৩টি প্রসঙ্গ তিনি তুলে ধরেছেন, তার ৯ নম্বর প্রসঙ্গে মমতা ওই কথা লিখেছেন।
মোদীকে লেখা চিঠির তৃতীয় পৃষ্ঠার একেবারে শেষের দিকে মমতা লিখেছেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের যে পরিবর্তিত কাঠামো আমাদের জানিয়েছিলেন, সেখানে আপনার দলের এক স্থানীয় বিধায়কের নাম ছিল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তাঁর উপস্থিত থাকার কোনও এক্তিয়ার নেই’। গত শুক্রবার ওই বৈঠকের আগেই বৃহস্পতিবার নবান্নের তরফে মৌখিক ভাবে দিল্লিকে জানানো হয়েছিল, শুভেন্দু ওই বৈঠকে থাকলে মমতা সেখানে উপস্থিত থাকবেন না। কারণ, কোনও ‘দলীয় বিধায়ক’-এর উপস্থিতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন না। যা থেকে স্পষ্ট যে, মমতা শুভেন্দুকে এখনও ‘বিরোধী দলনেতা’-র স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। পাশাপাশিই ওই চিঠিতে মমতা লিখেছেন, রাজ্যপাল এবং অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও ওই বৈঠকে থাকার কোনও সাংবিধানিক অধিকার নেই। কিন্তু ‘সৌজন্যের খাতির’-এ তিনি তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তুলছেন না। অর্থাৎ, প্রশ্ন তুলছেন শুভেন্দুর উপস্থিতি নিয়ে। নিজের কথা মতোই মমতা বৈঠকে থাকেনওনি। বৈঠক চলাকালীন তিনি ঘরে ঢুকে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষয়ক্ষতির লিখিত খতিয়ান তুলে দিয়ে দিঘার উদ্দেশে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন। মমতার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই।’’
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই ‘বিরোধী দলনেতা’ হিসাবে শুভেন্দুর নামে বিধানসভার ‘স্বীকৃতিপত্র’ প্রকাশ্যে এনেছিল বিজেপি। যার মাধ্যমে প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বিধায়ক নয়, শুভেন্দু ওই বৈঠকে থাকবেন বিরোধী দলনেতা হিসেবেই। তার পরেও অবশ্য মমতা তাঁর বক্তব্যে অটলই থেকেছেন। শুভেন্দুর নাম না করে শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বিষয়টি উত্থাপন করে রেখেছিলেন। সোমবারের চিঠিতে বিষয়টি তিনি ‘সরকারি ভাবে’ নথিবদ্ধ করিয়ে রেখেছেন। গত শুক্রবার ওড়িশায় ইয়াস-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটিতে আসেন মোদী। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল মমতার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy