রাজ্যে এনআরসি-র বিরোধিতায় মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রা। বৃহস্পতিবার শহরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
তাঁর প্রাণ থাকতে তিনি এ রাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরি করতে দেবেন না বলে কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর চ্যালেঞ্জ, ‘‘ক্ষমতা থাকলে এই রাজ্যের এক জনের গায়ে হাত দিয়ে দেখাও’’।
এনআরসি-র বিরোধিতায় তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার শহরে বড় মিছিল করেন মমতা। সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলে বহু মানুষ যোগ দেন। মিছিলের মুখ যখন চিড়িয়ামোড়ের কাছে, মিছিলের শেষপ্রান্ত তখন কাঁটাকলের কাছাকাছি। মমতার মিছিল-পথের ধারে এ বারই প্রথম বাঁশের ব্যারিকেডের ব্যবস্থা হয়েছিল। তবে তা টপকেই মমতার কাছে চলে আসেন অনেকেই।
নাগরিকপঞ্জি করে রাজ্যের প্রায় দু’কোটি মানুষকে দেশছাড়া করার যে হুমকি বিজেপি নেতারা দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘পারলে দুটো লোকের গায়ে হাত দিয়ে দেখ, এক জনের গায়ে হাত দিয়ে দেখ! এজেন্সি কোথায় থাকে আর মানুষ কোথায় থাকে দেখে নিও ভাল করে।’’
অসমে নাগরিকপঞ্জিতে ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘অসমে লক্ষ লক্ষ পুলিশ দিয়ে মুখ বন্ধ করতে পারলেও এখানে আমাদের মুখ বন্ধ করা অত সহজ হবে না। তুমি দমদম করে পুলিশ আনলে আমরাও পাল্টা দমদম দেব।’’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আমি স্বাধীন দেশের নাগরিক। ক’বার আমাকে পরাধীন হতে হবে? এখন কেন প্রমাণ দিতে হবে আমি এ দেশের নাগরিক কি না?’’
এনআরসি-র মাধ্যমে আরও একবার বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত চলছে বলেও মমতার অভিযোগ। বাংলার কোনও ধর্ম-বর্ণ-মতের মানুষকেই এ রাজ্য থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হতে দেবেন না বলে ফের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বাংলায় বাস করেন, তাঁরাই বাংলার নাগরিক। যে যে ভাষায় কথা বলেন, সেটাই তাঁর বৈশিষ্ট্য।’’
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাল্টা হুমকি, ‘‘দু’কোটি বাংলাদেশি এখানে ঢুকেছে। পশ্চিমবঙ্গকে করিডর করে গোটা দেশে বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে পড়ছে। এদের তাড়িয়েই ছাড়ব। পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকপঞ্জি হবেই।’’
মমতার পাল্টা হুমকি, ‘‘দেখি না, কতজনকে জেলে ঢোকাতে পার! দেখি না কত বড় জেল তৈরি করতে পার! আমি বেঁচে থাকতে তো এনআরসি হতে দেবই না। আর আমার মৃত্যুর পরেও চার প্রজন্ম তৈরি। তারাও কোনওভাবেই তোমাদের এনআরসি করতে দেবে না।’’ এনআরসি রোখার আন্দোলনে সকলকে তৃণমূলের সঙ্গে থাকার ডাক দিয়ে মমতার বক্তব্য, ‘‘বিজেপির টাকা আর এজেন্সির বিরুদ্ধে লড়তে পারে একমাত্র তৃণমূল। এখানে সিপিএম, কংগ্রেসের অস্তিত্ব নেই। কে কোন দল করেন, ভুলে যান। আমি চাই, এ লড়াইয়ে ছাত্র-যৌবন এগিয়ে আসুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy