Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

সব বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে হবে: মমতা

এ রাজ্যের নিরিখে দেখলেও কৃষি বিল ও রাজ্যসভার ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের অবস্থান একই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০৩
Share: Save:

নতুন কৃষি আইনকে সামনে রেখে বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ার ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সোমবার তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির বিপদ ঠেকাতে সব বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।’’ বিজেপি-বিরোধী এই আন্দোলনে তৃণমূল পিছনে থাকতেও রাজি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন নিয়ে মমতার এই আহ্বান তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই জেইই এবং নিট পরীক্ষা আয়োজনের বিরোধিতায় কিছু দিন আগে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে যৌথ ভাবে অ-বিজেপি রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এখন সনিয়া দেশের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে কৃষি বিল বিরোধী ক্ষোভের বাতাবরণকে কাজে লাগিয়ে মমতাই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়তে অগ্রণী ভূমিকা নিলেন। রাজ্যসভায় ওই বিলের জন্য ভোটাভুটি চেয়ে প্রতিবাদকারী ৮ জন সাংসদকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংসদের বাইরে ধর্নায় বসেছে তৃণমূল-সহ একাধিক বিরোধী দল। ফোনে সেই দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও এ দিন কথা বলেছেন মমতা। এবং এ রাজ্যের নিরিখে দেখলেও কৃষি বিল ও রাজ্যসভার ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের অবস্থান একই।

কৃষি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের (যা আইনে পরিণত হচ্ছে) বিষয়বস্তু এবং তা পাশ করানোর পদ্ধতির বিরুদ্ধে রবিবারই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, এর ফলে দেশে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি আসবে। আর সেই বিল পাশ করাতে গিয়ে মোদী সরকার গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিকেই ‘হত্যা’ করছে। সেই অবস্থানকেই আরও ব্যাখ্যা করে মমতা এ দিন বলেছেন, ‘‘কৃষককে লুঠ করতে এই আইন করা হয়েছে। এটা মজুতদার, কালোবাজারির সরকার। সংসদে যে কোনও বিলে ভোট চাওয়ার অধিকার সংবিধানে রয়েছে। অথচ তা দেওয়া হয়নি। হিটলারি কায়দায় দেশ চালাচ্ছে!’’ কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে মমতার মন্তব্য, ‘‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই! রাজ্যসভায় বিল পাশের দিনটি ‘ব্ল্যাক সানডে’ হয়ে থাকবে!’’ প্রতিবাদী সাংসদদের পাশে দাঁড়িয়ে মমতার আরও মন্তব্য, ‘‘সাংসদেরা ঠিক কাজই করেছেন। তাঁদের জন্য আমি গর্বিত!’’ যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহদের অভিযোগ, ডেরেক ও’ব্রায়েনেরা ‘অসংসদীয় ও অশোভন আচরণ’ করেছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী সেই আচরণকে সমর্থন করছেন!

আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক ও প্রয়োজনীয়’, কৃষি বিলের পক্ষে ব্যাট ধরলেন মোদী

আরও পড়ুন: কৃষি বিল নিয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মধ্যেই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ল মোদী সরকার

বিজেপি নেতারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা প্রচারে’র অভিযোগ করলেও তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গেই সুর মিলে গিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বাম-সহ ১৬ দলের। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি থেকে শুরু করে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীরা বলেছেন, কৃষকদের ও দেশের সর্বনাশ ডেকে আনার পাশাপাশি গণতন্ত্রকেও ‘হত্যা’ করা হল। ভোট চাওয়ার অধিকার সাংসদদের আছে। বিজেপি যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিষয়ে নিশ্চিত থাকে, তা হলে এমন ‘গলার জোরে’ অসংসদীয় ভাবে বিল পাশ করাল কেন? বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন হিসেবে যা ছিল, তা রদ করায় দাম নির্ধারণের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হবেন বড় বড় কর্পোরেট ও ব্যবসায়ী মহল। কৃষকদের কর্পোরেটের ধার্য করা দামের উপরে নির্ভর করতে হবে এবং তার ফলে অভাবী বিক্রি আরও বাড়বে।’ একই সুরে প্রতিবাদে সরব কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy