Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

সবার কথা বললেও দলের কাদের নাম উচ্চারণ করলেন না মমতা? আইনি কারণেই নাকি মুখে আনতে বাধা

বৃহস্পতিবার দলের মন্ত্রী, বিধায়কদের উদ্দেশে একটি নির্দেশ জারি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, চাকরির জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রী-বিধায়কেরা আর কোনও চিঠি দেবেন না।

মমতার বক্তব্য নিয়ে জল্পনা তৃণমূলে।

মমতার বক্তব্য নিয়ে জল্পনা তৃণমূলে। —ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৩২
Share: Save:

তৃণমূল তৈরিতে অবদান রয়েছে এমন অনেকের নামই বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের বুথকর্মী সম্মেলনে উচ্চারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, কয়েক জনের নাম তিনি আইনি কারণে বলতে পারছেন না। মমতা স্পষ্ট না করলেও, দলের একটা অংশের ধারণা, এককালে দলে নেত্রীর ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন দু’একজনের প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তবে সেই নাম নিয়েও আছে দ্বিমত।

বৃহস্পতিবার নিজের বক্তৃতার শুরুতেই মমতা বলেন, ‘‘দলের কর্মীরা আমাদের সম্পদ, তাই দলের নাম তৃণমূল। আজ অজিতদা (পাঁজা), কৃষ্ণাদি (বসু), রঞ্জিতদা (পাঁজা) নেই। আইনের জন্য কয়েকটি নাম নিতে পারছি না। তা-ও যাঁরা ছিলেন, তাঁরা জানেন কী ভাবে লড়াই করতে হয়েছিল।’’

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, দলনেত্রী মুকুল রায়ের কথা বলতে চেয়েছেন। যিনি তৃণমূলে থাকলেও খাতায়কলমে এখনও বিজেপির বিধায়ক। তৃণমূলের অন্য একটি অংশের বক্তব্য, নেত্রী জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলতে চেয়েছেন।

১৯৯৮ সালে তৃণমূল তৈরির সময় থেকে মমতার পাশে ছিলেন মুকুল ও পার্থ। মুকুল ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। ২০২১ সালের কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন মুকুল। এর পরে বিজেপি মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে আদালতেও গিয়েছে। কিন্তু বিধানসভার স্পিকার বার বার জানিয়ে দিয়েছেন মুকুল বিজেপিতেই রয়েছেন।

যদিও রাজ্য রাজনীতিতে এ কথা সকলেরই জানা যে বিধানসভা নির্বাচনের পরে পরেই ২০২১ সালের ১১ জুন ছেলে শুভ্রাংশু রায়কে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল। তাঁকে, বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-র চেয়ারম্যান করা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। তবে পরে সেই দায়িত্ব ছেড়ে দেন মুকুল। সম্প্রতি তাঁকে তৃণমূল ভবনে এসে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে বৈঠক করতেও দেখা যায়। তবে সেখানে মমতা ছিলেন না। ২১ জুলাই দলের শহিদ সমাবেশে এলেও মুকুল মঞ্চে ওঠেননি।

অন্য দিকে, পার্থও তৃণমূলের শুরুর দিন থেকেই দলে ছিলেন। একটা সময়ে দল ও রাজ্য সরকারের ‘দ্বিতীয়’ প্রধান বলেও পার্থকে চিহ্নিত করত অনেকে। তিনি দলের মহাসচিব ছিলেন। সেই সঙ্গে দলীয় মুখপত্রের সম্পাদকও ছিলেন। প্রথম থেকে তৃতীয়— মমতার তিন সরকারেই গুরুত্বপূর্ণ দফতর পেয়েছেন পার্থ। যদিও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করার পরে সরকার ও দলের সব পদ থেকেই পার্থকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে বলছেন, গ্রেফতার হওয়া পার্থের নাম নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা দেখেই তাঁর নামের উল্লেখ করেননি তৃণমূলনেত্রী। তবে বৃহস্পতিবার একাধিক বার জেলবন্দি বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নামোল্লেখ করেছেন মমতা। তাঁকে বীরের সম্মান দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হবে বলেও কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দলের মন্ত্রী, বিধায়কদের উদ্দেশে একটি নির্দেশও জারি করেছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ‘‘চাকরির জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রী, বিধায়কেরা চিঠি দেবেন না। কারণ, বরকত’দার (বরকত গনি খান চৌধুরী) সময় চিরকুট নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। নামটা আর আমি বলছি না। আর এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটুক আমি চাই না।’’

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ধারণা, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত চলতি বিতর্কের মধ্যে নতুন করে দলের মন্ত্রী, বিধায়কদের নিয়ে যাতে দল আর বিড়ম্বনায় না পড়ে, সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশে নিষেধাজ্ঞা।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Mukul Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy