জনপ্লাবন: রথের রশিতে টান। বৃহস্পতিবার মাহেশে। ছবি: দীপঙ্কর দে
বৃহস্পতিবার বিকেল। রথে টান সবে শুরু হয়েছে। রানাঘাট থেকে ভদ্রেশ্বরে মেয়ের বাড়িতে ঘুরে রথযাত্রা দেখতে এসেছেন এক বৃদ্ধ। জীবনে প্রথম বার। ইচ্ছে ছিল, রথের রশি টানবেন। কিন্তু ভিড়ের বহরে এগোতেই পারলেন না। একই অভিজ্ঞতা অনেকের। কারণ, মাহেশে রথটান শুরুর পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভিড়।
এক দিকে লাখো মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া, অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। দুয়ে মিলে মাহেশে পুলিশ-প্রশাসন নাজেহাল। সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় রথের দু’দিকে কিছুটা জায়গা ঘিরে ফেলা হয়। মন্দির চত্বর, রথের আশপাশ পুলিশ দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়।
মমতার সঙ্গে ছিলেন পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবেরা। প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেনও এসেছিলেন। জগন্নাথ দর্শনের ফাঁকে এক ঝলক মন্দিরের চৌহদ্দিতে চোখ বুলিয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি এখানে পর্যটন প্রকল্পের কাজে হাত দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, ‘‘মাহেশের রথযাত্রা বাংলার সর্ববৃহৎ। বাংলার পর্যটন মানচিত্রে মাহেশ বড় জায়গা পাক। এখানে নাটমন্দির, রন্ধনশালা, অতিথি আবাস করতে হবে। মার্বেল দিয়ে বাঁধানো হবে। তোরণ করা হবে। মাসির বাড়ির সংস্কার করা হবে।’’
মমতা জানিয়ে দেন, এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার ১০ কোটি টাকা দিয়েছে। আরও ১৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে। প্রয়োজন পড়লে আরও টাকা দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে উচ্ছসিত মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী বলেন, ‘‘মাহেশবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।’’
রথযাত্রা ঘিরে দিনভর মাহেশে ছিল সাজো সাজো রব। দোকানে জিলিপি, পাঁপড় ভাজা বিক্রি হয়েছে। স্নানপিড়ি মাঠে, জিটি রোডের দু’ধারে দোকান বসেছে মেলা উপলক্ষে। কোনও বিক্রি হচ্ছে ঘরকন্নার জিনিস, কোথাও মাটির পুতুল। সন্ধ্যার আগেই নির্বিঘ্নে মাসির বাড়িতে পৌঁছে যায় রথ। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহকে রথ থেকে নামিয়ে মাসির বাড়ির মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy