Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

হাসপাতালে শয্যা না পেলে অন্যত্র ব্যবস্থা, নির্দেশ মমতার

বিভিন্ন সময়েই রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল নিয়ে বিবিধ অভিযোগ ওঠে। সব থেকে বেশি যে অভিযোগ পাওয়া যায় তা হল জায়গা নেই বলে রোগী প্রত্যাখ্যান।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

সরকারি হাসপাতালে ‘বেড নেই’ বলে দায় এড়ালে চলবে না, বরং মানবিক হয়ে রোগীকে অন্যত্র ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে বলে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে তিনি এ কথা বলেন। এ দিন বৈঠকে আসার পথে ফোরশোর রোডের ধারে ২ নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডের বস্তিতে আচমকাই ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। বস্তিবাসীদের সমস্যা শোনার সময়েই এক যুবক মমতাকে জানান, তাঁর ভাই অসুস্থ। সরকারি হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়েই হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ভাইকে। সেখানে চিকিৎসার বিল দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯২ হাজার টাকা। সেই খরচ বহন করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান ওই যুবক।

বিষয়টি শুনে মুখ্যমন্ত্রী এর পরে চলে আসেন শরৎ সদনের প্রশাসনিক সভায়। সেখানে বস্তির বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের মাঝেই অসুস্থ যুবকের প্রসঙ্গটি তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘একটা গরিব ছেলে কোথা থেকে পাবে ৯২ হাজার টাকা?’’ এর পরেই সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে আরও মানবিক হওয়ার নির্দেশ দেন মমতা। তাঁর মতে, রোগীর চাপে হাসপাতালে জায়গা ফাঁকা না-ও থাকতে পারে। কিন্তু শুধু সেটা বলে দিয়ে রোগীকে অন্যত্র পাঠিয়ে দায়িত্ব এড়ানো যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘হতে পারে হাসপাতালে বেড নেই। আপনি সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে বলে দিচ্ছেন, হবে না। বেড নেই। আপনার কাছে যখন বেড পেলেন না তখন রোগী এমন জায়গায় চলে গেলেন যেখানে তাঁর ঘর-বাড়ি সব বিক্রি হয়ে গেল।’’

বিভিন্ন সময়েই রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল নিয়ে বিবিধ অভিযোগ ওঠে। সব থেকে বেশি যে অভিযোগ পাওয়া যায় তা হল জায়গা নেই বলে রোগী প্রত্যাখ্যান। এর জেরে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরে বেড়াতে হয় রোগী ও তাঁর পরিজনেদের। জায়গা না পেয়ে অনেকে বাধ্য হয়ে ধার-দেনা কিংবা সম্পত্তি বিক্রি করে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান। এই জায়গাতেই আরও মানবিকতার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তিনি মনে করেন, সরকারি জায়গায় চিকিৎসা না পেয়ে আর্থিক ক্ষমতা না থাকলেও অনেকে রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। এর জেরে সর্বস্বান্ত হতে হয় রোগীর পরিবারকে।

এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘আপনি ব্যবস্থা করবেন, যাতে অন্য কোথাও সেই রোগী ভর্তি হতে পারেন। আপনার কাছে যখন এক জন রোগী এসে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন, তখন তো তাঁর ক্ষমতা আছে কি নেই, সেটাও দেখবেন।’’ ফোরশোর রোডের ওই বস্তির বাসিন্দা যুবকের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি কিছুটা সহযোগিতা করে দেবেন বলেও এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রতিটি বিষয় তাঁর একার পক্ষে দেখা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদেরও বিষয়গুলি দেখতে হবে। সবাই যদি মনে করেন আমিই সব কিছু দেখে নেব, আর কেউ কিছু করবেন না, তা হলে এতগুলি লোকের কী প্রয়োজন আছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy