Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Flood Situation in West Bengal

বন্যা পরিস্থিতিতে বেশি নজর দিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

সূত্রের দাবি, এ দিন বাকি মন্ত্রীদের উপর নিজ নিজ এলাকা দেখভালের বাড়তি দায়িত্ব ছেড়েছেন মমতা। পুজোর ব্যস্ততার থেকে বন্যা পরিস্থিতি সামলানো যে আরও জরুরি, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

এখনও জলে ডুবে রয়েছে চাষের জমি। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফসল। দাসপুরের রামদাসপুর এলাকায়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

এখনও জলে ডুবে রয়েছে চাষের জমি। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফসল। দাসপুরের রামদাসপুর এলাকায়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৩৩
Share: Save:

পুজোয় নয়, বেশি নজর দিতে হবে বন্যা পরিস্থিতির দিকে—সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাকি মন্ত্রীদের উদ্দেশে এই বার্তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। পাশাপাশি, এ দিনই জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা। বন্যা পরিস্থিতি এবং পুজোর প্রস্তুতি—উভয় দিকেই নজর রাখতে বলা হয়েছে জেলা কর্তাদেরও। পরে মুখ্যসচিব সাংবাদিক বৈঠক করে ইঙ্গিত দিয়েছেন, চলতি বছরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এবং জলমগ্ন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রের কাছে তা পাঠানোরও ভাবনাচিন্তা করবে সরকার।

সূত্রের দাবি, এ দিন বাকি মন্ত্রীদের উপর নিজ নিজ এলাকা দেখভালের বাড়তি দায়িত্ব ছেড়েছেন মমতা। পুজোর ব্যস্ততার থেকে বন্যা পরিস্থিতি সামলানো যে আরও জরুরি, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে ত্রাণ পৌঁছনো থেকে পুনর্বাসন— সব দিকেই বাড়তি নজর রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। প্রসঙ্গত, কয়েকটি জায়গায় ত্রাণ নিয়ে যে অসন্তোষের খবর পাচ্ছে প্রশাসন, সেই দিক থেকে এই নির্দেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজ্যের দাবি, নেপালের কোশি জলাধার থেকে প্রায় ছ’লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে তা বিহার হয়ে রাজ্যের নদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধি করতে পারে। সেই কারণে, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং দুই দিনাজপুরকে সতর্ক করা হয়েছে। মহালয়ায় ভরা কটালের আশঙ্কা করছে সরকার। ফলে অন্তত ৩ অক্টোবর পর্যন্ত পরিস্থিতির উপর সর্ব ক্ষণ নজর রাখার নির্দেশ প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে দিয়েছে নবান্ন। মুখ্যসচিব পরে বলেছেন, “ডিভিসি-র জল ছাড়ার কারণে বহু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই প্রতিটি এলাকার কী পরিস্থিতি, সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের কাজ চলবে। এক-এক জনকে ন্যূনতম তিনটি করে ত্রিপল দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

রবিবারই উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উত্তরবঙ্গের জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক প্লাবনে উত্তরবঙ্গের বহু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জাতীয় সড়কগুলিতে। সেই পরিকাঠামো সংস্কারের কাজ দ্রুত সেরে ফেলার উপর এ দিন জোর দিয়েছে নবান্ন।

একাধিক বার সাম্প্রতিক প্লাবনের জন্য ডিভিসি-কে কার্যত দায়ী করেছিল রাজ্য সরকার। এ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে যথেষ্ট টানাপড়েন চলেছে। তবে কি ক্ষয়ক্ষতির সবিস্তার তথ্য কেন্দ্রের কাছে পাঠাবে সরকার? মুখ্যসচিব বলেন, “অনেক জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। জল নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা হবে। তা ছাড়া ফসলের যা ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণের ব্যবস্থা করা হবে রাজ্যের শস্যবিমা যোজনা থেকে। তা ছাড়া বাড়িঘরের যা ক্ষতি হয়েছে, তা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির হবে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকেও পুজোর প্রস্তুতি যথাযথ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কার্নিভালগুলি যে সব এলাকায় হবে, সেখানে বাড়তি প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। পুজোর সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিকে।

অন্য বিষয়গুলি:

flood Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE