মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কর্মজীবনের বিভিন্ন বছরে বর্ধিত বেতনের সময়সীমা বাড়ানো, সরকারি কর্মীদের স্বাস্থ্য বিমায় ‘ক্যাশলেস’ বা বিনা নগদের সুযোগ বৃদ্ধি, প্রশাসনের কয়েকটি স্তরে বাড়তি পদ সৃষ্টির মতো কিছু সুবিধা বুধবার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রের সমহারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা না-করে এই সব সুবিধা ঘোষণা করায় সরকারি কর্মচারী মহলের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণায় ডিএ নিয়ে কোনও আশ্বাস নেই কেন, আন্দোলনরত কর্মচারী সংগঠনগুলির একাংশ সেই প্রশ্ন তুলছে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নবান্ন সভাঘরে কয়েকটি কর্মচারী সংগঠন এবং আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। কিন্তু ডিএ-র দাবিতে মামলাকারী সংগঠনগুলির অভিযোগ, হাতে-গোনা কয়েকটি সংগঠনকে বৈঠকে ডেকে কর্মী-আন্দোলনে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে এবং ডিএ-র ব্যাপারে যথারীতি নীরব থেকেছে সরকার।
বৈঠকের পরে রাজ্য সরকার লিখিত ভাবে জানায়, চাকরিজীবনের শুরু থেকে আট, ১৬ এবং ২৫ বছরের মাথায় বর্ধিত ‘পে স্কেল’ বা বেতনহার পাওয়া যেত। এ বার শেষের দু’টি ধাপ এক বছর করে কমে হবে ১৫ এবং ২৪ বছর। অর্থাৎ ওই দু’টি স্তরে কর্মীরা এক বছর করে আরও দু’বছর বাড়তি হারে বেতন পাবেন। সরকারি স্বাস্থ্য বিমায় দেড় লক্ষের বদলে দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা নগদের সুবিধা পাওয়া যাবে। এসএসকে বা শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং এমএসকে বা মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষকেরা প্রতি বছর ৩% হারে ভাতা বৃদ্ধি এবং অবসরের সময় এককালীন তিন লক্ষ টাকার সুবিধা পান। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত, মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরের আওতায় থাকা সাড়ে তিন হাজার শিক্ষকও ১ জুন থেকে এই সুবিধা পাবেন। পদোন্নতির ফলে বিভিন্ন দফতরে তৈরি শূন্য পদগুলি তিন মাসের মধ্যেই পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। সরকারি সিদ্ধান্তে ‘কমন ক্যাডার সার্ভিসে’ অতিরিক্ত সচিবের ১০টি বাড়তি পদ সৃষ্টি হয়েছে। সেকশন অফিসারের ৪৭০টি পদ বেড়ে ৬০০, ওএসডি বা অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি কিংবা তার মতো পদ ২০৮ থেকে বেড়ে ৩০০, সহকারী সচিবের ১১২টি পদ বেড়ে ১৫০, উপসচিবের পদ ১১৪ থেকে বেড়ে ১৫০ এবং যুগ্মসচিবের ২০টি পদ বেড়ে হচ্ছে ৩০টি। রেভিনিউ সার্ভিস, সমবায়, শ্রম, খাদ্য ও সরবরাহ, তথ্য ও সংস্কৃতি, অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস লিগ্যাল এবং স্ট্যাটিস্টিক্স সার্ভিসে যুগ্ম ও বিশেষ সচিব পদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এতে ঠিক সময়ে পদোন্নতির সুযোগ মিলবে বলে সরকারের দাবি। পদ বাড়ানো হয়েছে সেচ, পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার বিভিন্ন ধাপেও।
অন্যতম মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সভাপতি শ্যামলকুমার মিত্র বলেন, “বকেয়া ৩৬% ডিএ ১২ মাস দিতে সরকারের খরচ হত ২৭,৭৫৬ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১১-১২ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বেতন ও ভাতা খাতে ব্যয় না-হওয়া অর্থের পরিমাণ ২৫,২৬২ কোটি। ফলে ২৬০০ কোটি টাকার মতো দিতে হবে সরকারকে। কিন্তু এই বিষয়ে এ দিনের ঘোষণায় কোনও উচ্চবাচ্যই নেই।” আর কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, “এসএসকে, এমএসকে শিক্ষকদের ছিটেফোঁটা সুযোগ ছাড়া বাকি সব তেলা মাথায় তেল ঢালার ঘোষণা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy