—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েতের ভোটগণনা মিটে গিয়েছে এক সপ্তাহ আগে। এ বারে উদ্ধার হল ব্যালটবাক্স। অথচ, সে বাক্সে থাকা ব্যালট ‘নিখোঁজ’ থাকায়, ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে পুনর্নির্বাচন। মঙ্গলবার গণনাকেন্দ্রের তালা বন্দি ঘর থেকে সিল-সহ তিনটি ব্যালটবাক্স উদ্ধারকে ঘিরে তেতে উঠল মালদহের গাজল। কী ভাবে গণনাকেন্দ্রে এই ব্যালটবাক্সগুলি রয়ে গেল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন সকালে গাজলের বিডিওকে গ্রেফতারের দাবিতে কখনও পথ অবরোধ, কখনও অবস্থান-বিক্ষোভ করেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ব্লক অফিসে তালা দিয়ে, বিডিওর জন্য কালো গোলাপ এবং মিষ্টি ব্লক অফিসের গেটে ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।
ঠিক কী কারণে এই পরিস্থিতি, সে প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “ব্যালটবাক্সগুলির খোঁজ না মেলায় বুথে পুনর্নির্বাচন করা হয়েছিল। সে ব্যালট গণনাও হয়েছে। এ দিন পুরনো ব্যালটবাক্স মিলেছে। পুলিশ খতিয়ে দেখছে।”
গাজলের সালাইডাঙা পঞ্চায়েতের জীবনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৩ নম্বর বুথের গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ— তিনটি আসনেরই ব্যালটবাক্স ‘নিখোঁজ’ ছিল বলে দাবি প্রশাসন সূত্রের। ৯ জুলাই পুলিশে অভিযোগ করেন বিডিও। পুননির্বাচনে তৃণমূল ৩২৪, বিজেপি ২০৫ এবং নির্দল চারটি ভোট পেয়েছে।
হাজি নাকু মহম্মদ হাই স্কুলে গাজল ব্লকের ‘ডিসিআরসি’ কেন্দ্র ছিল। সেখানেই ছিল স্ট্রংরুম। সে কেন্দ্রেই ভোট গণনাও হয়। প্রশাসনের দাবি, ভোটগ্রহণ হওয়ার পরে, প্রিসাইডিং অফিসারেরা ডিসিআরসি কেন্দ্রে ব্যালটবাক্সগুলি জমা দেন। সে ব্যালটবাক্স স্ট্রংরুমে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে রাখা হয়। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হাজি নাকু মহম্মদ হাই স্কুলের দোতলার ২০৭ নম্বর ঘরে ত্রিপল দিয়ে ঢাকা তিনটি ব্যালটবাক্স মেলে। সে বাক্সগুলি জীবনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৩ নম্বর বুথের, দাবি প্রশাসনের। পরে, সেগুলি স্কুল থেকে ব্লক প্রশাসনিক ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ননীগোপাল বর্মণ বলেন, “ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরেও স্কুলে পড়াশোনা চালু হয়নি। সোমবার স্কুল খুললে ২০৭ নম্বর রুমটি তালা বন্ধ অবস্থায় দেখতে পাই। ব্লক প্রশাসনকে বলেও তালা থাকার কারণ জানতে পারিনি। পরে, তালা ভেঙে ঘরে ঢুকলে, ব্যালটবাক্সগুলি দেখা যায়।”
মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর দাবি, “বিডিওর মদতে তৃণমূল নেতারা বাড়িতে ব্যালটবাক্স নিয়ে গিয়ে ছাপ্পা ভোট দিয়ে গণনাকেন্দ্রে রেখে গিয়েছেন। এই কারচুপিতে বিডিও, পুলিশ সবাই জড়িত।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের মন্তব্য, “সিবিআই তদন্ত হলে বিডিওরা কী ভাবে কারচুপি করেছেন, সামনে আসবে।” মন্তব্য করতে চাননি গাজলের বিডিও উষ্ণতা মুক্তান। তবে তৃণমূলের গাজলের ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী দীনেশ টুডু বলেন, “পুরনো ব্যালটবাক্স উদ্ধার হয়েছে। তা নিয়েই বিরোধীরা জলঘোলা করতে চাইছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy